মরন বিলাস PDF Download আহমদ ছফা

আহ্মেদ সফা রচিত মরণ বিলাস উপন্যাসটির পিডিএফ ভার্সন আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলো। আপনি চাইলেই খুব সহজে বইটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে পারবেন। বইটা ডাউনলোড লিংক শেয়ারের আগে চলুন জেনে নেয়া যাক বইটা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

মরণ বিলাস আহমদ ছফা কাহিনী সংক্ষেপ ও বুক রিভিউ

‘মরন বিলাস’ উপন্যাসটির লেখক বাংলাদেশের গণবুদ্ধিজীবী আহমেদ ছফা। একজন রাজনীতিবিদের জীবনকাহিনী কে মূল বিষয় হিসেবে লিখিত এই বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৯ সালে। বইটির প্রকাশক খান ব্রাদার্স এন্ড কোম্পানি৷বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত এবং সফল রাজনীতিবিদের জীবনকথাই এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য।

উপন্যাসটির প্রথম কিছু অংশ পড়েই পাঠক বুঝতে পারবেন যে গল্পের মূল চরিত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফজলে ইলাহি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে সফল হলেও ব্যক্তিজীবনে অত্যন্ত খারাপ চরিত্রের একজন লোক ছিলেন। তার মরণশয্যায় শুয়ে তিনি এসকল পাপের কথাই স্বীকার করবেন।

আর এভাবেই পাঠকেরা জানতে পারবেন তার জীবনকাহিনী।
উপন্যাসের একদম শুরুতে পাঠক দেখতে পাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফজলে ইলাহি হাসপাতালে তার কেবিনে শুয়ে আছেন এবং তার সাথে রয়েছে তার খাস তাবেদার মাওলা বক্স। মন্ত্রী ভুগছেন এক কঠিন অসুখে।

সারাদিন অচেতন থাকার পরে রাতে জ্ঞান ফিরলে মাওলা বক্স তাকে খবর দেন যে শিক্ষা, কৃষি, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা তাকে দেখতে এসেছিলেন। এতে করে তিনি খুশি হন।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট তাকে দেখতে না আসায় মনে মনে ক্ষুব্ধ হন। কারণ তার ছিলো নিজেকে নিয়ে প্রচন্ড অহংকার এবং ক্ষমতার দাপট। রাত বাড়তে থাকে। কেবিনে এক সময় মন্ত্রী এবং মাওলা বক্স ছাড়া আর কেউ থাকেনা। এসময় মন্ত্রী জানান তিনি পরেরদিন ভোর হতে হতে আর বাঁচবেন না।

মাওলা বক্স তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি জানান এটাই সত্যি। এক পর্যায়ে মৃত্যুশয্যায় শুয়ে তিনি পিছনের দিকে ফিরে তাকান এবং দেখেন সেখানে পাপ আর পাপ ছাড়া কিছুই নেই।

জীবনের সকল কৃতকর্মের কথা তখন তার চোখের সামনে এসে একে একে হাজির হতে থাকে। তিনি কাউকে সেগুলো বলে রেহাই পেতে চান। তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন তার তোষামোদকারী তাবেদার মাওলা বক্সকেই বলে যাবেন এই সব কথা।

মাওলা বক্সও অতি আগ্রহ সহকারে শুনতে রাজি হয়। আর তখন থেকেই শুরু হয় উপন্যাসের মূল কাহিনী। সেই রাতে মন্ত্রী ফজলে এলাহী তার বড় বড় সব অপরাধের কথা বলতে থাকেন। যার মাধ্যমে তার চরিত্রের কাম,ক্রোধ এবং লোভের মতো ঘৃণ্য দিকগুলো উন্মোচিত হতে থাকে।

ফজলে ইলাহি প্রথমদিকে পাকিস্তানের মন্ত্রী ছিলেন৷ কিন্তু অত্যন্ত ধূর্ত এবং চতুরতায় পারদর্শী হওয়াতে শেষ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশেও নিজের রাজনৈতিক জায়গা ধরে রাখতে সক্ষম হন৷

তিনি বলতে থাকেন কিভাবে তিনি তার পরিবারের মানুষের সাথেও অনাচার করেছেন। তার চাচাতো ভাই রেঙ্গুনে অবস্থান করার সময় তিনি কিভাবে সেই ভাইয়ের স্ত্রী কে নিজের লালসার বস্তুতে পরিণত করেছিলেন সেই বর্ণনা দেন মাওলা বক্সের কাছে৷

পরবর্তীতে সেই ভাইয়ের স্ত্রী যখন গর্ভবতী হয়ে পরে তখন সমাজের ভয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে হয় তাকে। তারপর তিনি বলেন তার ব্যক্তিগত আক্রোশের জন্য কিভাবে জীবন্ত পুড়ে মরতে হয় স্কুলের হেডমাস্টার এবং ক্লাসের ফার্স্টবয়কে।

এসব অপকর্মের কথা শুনে মাওলা বক্সের মতো মেরুদণ্ডহীন মানুষেরও প্রচন্ড ঘৃণা হতে থাকে। সে এক পর্যায়ে এসে আর শুনতে চায় না। কিন্তু কোন উপায় নেই মন্ত্রী বলেই যাচ্ছেন বলেই যাচ্ছেন। তার অপকর্মের তালিকা যেন শেষ হবার নয়। সব শেষে বলেন গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংয়ের বিভৎস কাহিনী৷

শত শত মানুষকে মেরে ফেলার সেই হত্যাযজ্ঞে যে তার নিজেরও হাত ছিলো সে কথাও তিনি স্বীকার করেন৷ এ সকল ঘটনা শুনতে শুনতে অসহ্য হয়ে মাওলা বক্স এক পর্যায়ে বলেই ফেলে “ফজলে এলাহি সাহেব আমি আপনার ওই জঘন্য কাহিনী আর শুনতে পারব না।

আমি সহ্যের শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। আর একটা কাহিনীও যদি আপনি বয়ান করেন তাহলে আমাকে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পরে আত্মহত্যা করতে হবে।” নিজের কর্মচারীর কাছে এভাবে ধিক্কার পাওয়ার পরও ফজলে লোহানী নিজেকে দোষী মনে করেন না।

তিনি তার যুক্তি দেখান যে সেই সময় যদি সে এই অপকর্ম গুলো না করতেন তাহলে তিনি আজকের এই অবস্থানে আসতে পারতেন না৷ সব দোষ দেন তার পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে। মন্ত্রীর এসব কাহিনী শুনে মাওলা বক্সের চিন্তা চেতনাতেও ঘটে ব্যাপক পরিবর্তন।

সে অন্যায়কে নতুন চোখে দেখতে শুরু করে। এই একটা রাত চিন্তাজগৎ এবং বিবেকে বিশাল পরিবর্তন এনে দেয়। এতসব অন্যায় অপকর্ম যখন ফজলে ইলাহির মৃত্যুশয্যায় এসে উপস্থিত হয়েছে তখনও তার মনে একটা স্থির বিশ্বাস থাকে যে সে নিজের জীবনের একটা পূণ্যের দ্বারা সৃষ্টিকর্তার শাস্তির হাত থেকে বেঁচে যাবেন।

তিনি নিশ্চিত হন যে ওই একটা ভালো কাজ তাকে সব পাপের বোঝা থেকে মুক্ত করবে।সেই পূণ্যের কাজটা কী সেটা জানতে হলে পাঠককে অবশ্যই বইটি পড়ে দেখতে হবে।

বইটি পড়ার সময় পাঠক নিজের আশেপাশের কিছু বাস্তব চরিত্রকেই চোখের সামনে দেখতে পাবেন যারা পাপ আর অপকর্মের মাধ্যমেই আজ সমাজের বড় বড় পদে অধিষ্ঠিত আছে। সমাজের উপর মহলের মুখোশ এভাবে টেনে খুলে দিতে আহমেদ ছফা কখনো পিছপা হননি৷

তাই তাঁর সাহসী লেখনীর স্বাদ নিতে পাঠককে তার বই পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

মরণবিলাস পিডিএফ ডাউনলোড

মরণবিলাস উপন্যাসটি সম্পূর্ণ ফ্রিতে ডাউনলোড এর জন্য নিচে দেওয়া লিংকে ক্লিক করুন। এটা ডাউনলোড এর জন্য কোন ধরনের অ্যাকাউন্ট এর প্রয়োজন নেই। ফাইল সাইজ আকারে অনেক ছোট। সুতরাং এটি ডাউনলোডের জন্য বেশি মেগাবাইট এর দরকার নাই।

আশা করবো আপনি বইটি ডাউনলোড করতে পেরেছেন। বই ডাউনলোড করতে গিয়ে যদি কোন সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে আমাদের সাহায্য নিতে পারেন।

আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আরো সুন্দর সুন্দর বই পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আপনার বন্ধুকেও ওয়েব সাইটটি ভিজিট করতে বলুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top