মরণোত্তম PDF Download সাদাত হোসাইন

‘মরণোত্তম’ উপন্যাসটির রচয়িতা হলেন ‘সাদাত হোসাইন’। বর্তমান সময়ের একজন অত্যন্ত প্রতিভাবান এবং জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হলেন সাদাত হোসাইন। শুধু মাত্র ঔপন্যাসিক বললে ভুল হবে, সাহিত্যিক বললে তার পরিচয় যথার্থ হয়। কেননা, শুধু মাত্র উপন্যাস নয়।

ছোটগল্প থেকে শুরু করে কবিতা পর্যন্ত প্রায় সাহিত্যের সকল ক্ষেত্রেই বিচরণ রয়েছে লেখকের এবং প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই পাঠক সমাজের বাহবা পেয়েছেন এই লেখক। সাদাত হোসাইনের লেখা সাবলীল প্রাঞ্জল, কোন ধরণের জটিলতা নেই৷ বর্ণনাগুলো জীবন্ত, এসকল বিষয় মিলে তার লেখাগুলো অনবদ্য৷ আরেকটি বিষয় যা লেখকের লেখনীকে নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

তা হলো, সামাজিক বিভিন্ন অসঙ্গতি ও সমস্যার বিষয়গুলো তিনি তার লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। অনেক লেখক যেসব স্পর্শকাতর বিষয়গুলো এড়িয়ে যেতে চান সাদাত হোসাইন তেমনটি করেন না। মরণোত্তম উপন্যাসটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় ২০২০ সালে এবং প্রকাশনী সংস্থা ছিল ‘অন্যপ্রকাশ’।

উপন্যাসটির মূল পটভূমি গড়ে উঠেছে একটি ধর্ষণকে কেন্দ্র করে। শুধু মাত্র ধর্ষণ নয় ইভটিজিং সহ সমাজের আরও কিছু অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয়ের বিপক্ষে একটি প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর বললেও ভুল হবে না এই উপন্যাসটিকে। উপন্যাসটির মূল চরিত্র হলো কোহিনূর এবং আজিজ খাঁ। এছাড়াও গল্পের প্রয়োজনে আরও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চরিত্র উপনীত হয় পটভূমিতে।

আজিজ খাঁ হলেন দবির খাঁ মেমোরিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুলটির নাম আজিজের নিজের বাবার নামে হওয়ায় এর প্রতি অন্যরকম এক টান কাজ করে আজিজের। স্কুল এবং এর শিক্ষার্থীদের প্রতি রয়েছে আজিজের বিশেষ ভালোবাসা। তার জীবনের একটি বড় অংশ জুড়েই রয়েছে এই স্কুলটি।

কোহিনূর ছিলো দবির খাঁ মেমোরিয়াল স্কুলের দশম শ্রেণীর একজন ছাত্রী। কোহিনূর যখন তার সহপাঠীদের নিয়ে স্কুলের উদ্দেশে রওনা হতো, রাস্তায় তারা ইভটিজিং এর স্বীকার হতো এবং এই ঘটনা আজিজকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোথাও কারও কাছে এই সমস্যার কোন সুরাহা হচ্ছিলো না এবং যেই বখাটেরস এই ঘৃণ্য অপরাধ করছিলো তারাও ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছিলো।

ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকার অন্যতম কারণ হলো এই বখাটেদের নেতৃত্ব দান করছিলো স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল মোল্লার ছেলে রাকিব। এসবের মাঝেই একদিন এক কাজে আজিজ গ্রাম থেকে শহরে গিয়েছিলেন। এসে তিনি জানতে পারলেন কোহিনূর আত্মহত্যা করেছে এবং আত্মহত্যার আগে সে নাকি আজিজের বাসায় তাকে খুঁজতে গিয়েছিল।

এখবর শুনে আজিজ পুলিশের কাছে যান মামলা করার জন্য কিন্তু পুলিশ তার মামলা নেয় না, উপরন্তু তাকে হেনস্তা করে৷ পরে আজিজ একটি চিঠি পায় যেটাতে লেখা রাকিব নয় বরং নুরুল মোল্লা কোহিনূরের সাথে পশু সূলভ আচরণ করেন এবং তীব্র নির্যাতন করেছিলেন৷ এসব জানার পর আজিজ মনস্থির করেন তিনি কোহিনূরের জন্য লড়াই করবেন। আর এখান থেকেই উপন্যাসে অনেক বড় বড় পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে৷

উপন্যাসটি আমাদের সমাজের প্রতিরূপ স্বরূপ। আমাদের সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি যেভাবে গল্পে ফুটে উঠেছে তা প্রসংশার দাবিদার। এককথায় বলতে গেলে অসাধারণ একটি সামাজিক উপন্যাস এটি। যেকোনো পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যেতে বাধ্য উপন্যাসটি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top