আমাদের দেশের স্বনামধন্য কিছু লেখকদের মধ্যে যার নাম না বললেই নয় সে হলো মোশতাক আহমেদ। তিনি বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় লেখক। তিনি আমাদের সাহিত্য ভান্ডার কে অনেকটা সমৃদ্ধ করেছেন। তার রচনায় সবাই মুগ্ধ। তার ভাষার কারুকাজ সবার কাছে প্রশংসার দাবিদার। তিনি খুব অল্পসময়ের মধ্যেই সবার কাছে অনেক পছন্দের হয়ে গেছে। তার উল্লেখযোগ্য কিছু উপন্যাসের মধ্যে “মৃত্যুপ্রাসাদ” অন্যতম।
তার লেখাগুলো পাঠকদের এতটাই আকৃষ্ট করেছে যে কেউ কেউ হুমায়ূন আহমেদের পরের স্থান এই লেখককে দিয়েছে। তার লেখাগুলো পড়ে যেমন আনন্দ পাওয়া যায় তেমনি মনে একটা পরিতৃপ্তির ভাব চলে আসে। তার কিছু লেখাগুলো এতটাই হৃদয়স্পর্শী হয়ে থাকে যেটা পড়ার পরে মনে কিছুক্ষণ সেই রেশ থেকে যায়। তাকে নিয়ে যতই বলা যাবে ততই কম বলা হবে।
“মৃত্যুপ্রাসাদ” মোশতাক আহমেদের একটি অন্যতম অতিপ্রাকৃত অভিক উপন্যাস। এই উপন্যাসটি প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয় 2020 সালে। বইটি প্রকাশ করেছে অনিন্দ্য প্রকাশনী। বইটিতে মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা রয়েছে 120 টি। বর্তমান বাজেরে বইটির মুদ্রিত মূল্য হল 188 টাকা।
কাহিনী সংক্ষেপ
মোশতাক আহমেদ এর সবচেয়ে বেশি নামকরা বইগুলো হচ্ছে শিশুদের জন্য সাইন্স ফিকশন ও অতিপ্রাকৃত ভৌতিক উপন্যাস গুলো। তবে তার অন্যান্য উপন্যাস গুলো বেশ চমৎকার। তার যতগুলো ভৌতিক উপন্যাস আছে তার মধ্যে “মৃত্যুপ্রাসাদ” একটু ভিন্ন রকমের।
এই উপন্যাসটিতে প্রধান চরিত্র হিসেবে আমরা দেখতে পাব আশিক ও মুনমুন কে। মুনমুন হল সর্ম্পকে আশিকের স্ত্রী। একদিন আশিক একটি পুরনো প্রাসাদে আটকা পড়ল। এই মৃত্যু প্রাসাদে আশিকের পরিচয় হয়নি নিশিনি নামের এক সুন্দরী নারীর সাথে। নিশিনি হল এক অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী। তার এ রূপে কেউ মুগ্ধ না হয়ে থাকতে পারবে না।
নিশিনি কে লাল শাড়িতে আরো অপরূপ সুন্দর লাগে। কিন্তু আশিক এটা ভালো করেই জানে যে তার এই সৌন্দর্যের পেছনে লুকিয়ে আছে এক পৈশাচিক নারীমূর্তি। আশিক বুঝতে পেরেছিল নিশিনির একমাত্র উদ্দেশ্য হলো তাকে মেরে তার রক্ত পান করা। আশিক এটা ভেবে খুবই চিন্তিত ছিল যে তাকে এই মৃত্যুপ্রাসাদ থেকে কি কেউ রক্ষা করতে পারবে না?
আশিক একদিন সেই প্রাসাদ থেকে পালাতে চেষ্টা করে কিন্তু নিশিনি সহ আরো দুই মহিলার কাছে সে ধরা পড়ে যায়। এই অসহায় অবস্থায় তাকে মেরে ফেলে তার রক্ত খাওয়ার কথা নিশিনি বলে। এ অবস্থায় আশিকের মনে পড়ে তার স্ত্রী মুনমুনের কথা। কারণ আশিক এখনই মরতে চায় না। সে বাঁচতে চায় তার ভালোবাসার মানুষের জন্য।
এই পৃথিবীতে মুনমুনের যেমন আশিক ছাড়া কেউ নেই তেমনি আশিকের ও মুনমুন ছাড়া কেউ ছিলনা। তাই সেভাবে যে করেই হোক তাকে বাঁচতে হবে কারণ মুনমুন ও আশিক ভালোবেসে করে বিয়ে করেছিল। শেষ পর্যন্ত মুনমুন আসে তার স্বামীকে বাঁচাতে। মৃত্যু প্রাসাদে এসে মুনমুন নিশিনির পাতা ফাঁদে পা দেয়। নিশিনি আশিক কে শর্ত দেয় সে যদি এখান থেকে বাঁচতে চায় তাহলে নিজের স্ত্রী মুনমুনের রক্ত পান করতে হবে।
শেষ পর্যন্ত মুনমুন কে বাঁচাতে পেরেছিল তার স্বামীকে? ভয়ঙ্কর প্রাসাদ থেকে তাদের কী কেউ উদ্ধার করতে এসেছিল? নিশিনি কে তার যোগ্য শাস্তি কেউ কি দিয়েছিল? এই সব কিছুর উত্তর লুকিয়ে আছে বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত। তাই আর দেরি না করে চমৎকার এই উপন্যাসটি আপনারা যারা যারা পড়েননি এখনি পড়ে ফেলুন।