নীল নক্সা PDF Download ফুয়াদ আল ফিদাহ

ফুয়াদ আল ফিদাহ ভাইকে আমি একজন ডাক্তার ও অনুবাদক হিসেবেই চিনি। মৌলিক থ্রিলার লেখক হিসেবেও তার যে কিছু নামডাক আছে সেটা আমি ঠিক জানতাম না। জেনেছি বেশ পরে। আফসোস হচ্ছিল আগে জানলে তাঁর অনবদ্য লেখাগুলো আরও আগে পড়তে পারতাম। যাই হোক, তার দ্বিতীয় মৌলিক থ্রিলার হলো ‘নীল নক্সা’।
এই নীল নক্সা নামটা পরিচিত। অনেক জায়গায় শুনা যায়। এই নীল নক্সা প্রকাশিত হয় আদী প্রকাশনী থেকে। খুব একটা বড় বই না। ১৫৯ পৃষ্ঠার বই। যারা বইটি থেকে এখনও বঞ্চিত তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।
কাহিনী সংক্ষেপ
আন্ডারগ্রাউন্ডের ডন ওয়াসি। অপরাধের চূড়ায় বসে যে অন্ধকারের হর্তাকর্তা হয়ে বসে আছে, নিয়ন্ত্রণ করছে দুর্ধর্ষ এক সন্ত্রাসযজ্ঞ। আচমকাই তার গড়া সাম্রাজ্যে ফাটল দেখা দেয়, তার বিরুদ্ধেই সাক্ষ্য দিতে আসে দলের আরেক শীতল রক্তের বিষাক্ত গোখরা নাহিদ গুণ্ডা। সেই সাথে সিদ্ধান্ত নেই আত্মসমর্পণ করে ফাঁস করে দেবে ওয়াসির আড়ালের সব গল্প। কিন্তু অদ্ভুত ভাবেই সাক্ষ্য দেয়ার ঠিক আগ মুহূর্তেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নাহিদ গুণ্ডা। অটোপসি রিপোর্ট থেকে শুরু করে প্রাথমিক তদন্তে একেবারেই স্বাভাবিক মৃত্যু মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে অন্য এক সত্যি? সত্যিটা কি? তবে কি ওয়াসিই নাহিদের নিঃশ্বাসের শেষ বিন্দুটা নিজের করায়ত্ত করেছিল নাকি অন্য কোনো নীল নক্সা অঙ্কিত হচ্ছে আড়ালে?
একে একে জড়িয়ে পড়ে রহস্যময়ী এক নারী চরিত্র, ঢাকা শহরের সহস্র কানাগলিতে সত্যের সন্ধানে নেমে পড়ে ডাক্তার থেকে পুলিশ হওয়া রাফসান এবং জুনিয়র আদনান। সত্যের কাছে পৌঁছানোর সময় খুবই কম, নাহলে তার আগেই খুনের দায়ে জেলে যেতে হবে ওদেরই বস সৈয়দ মারুফকে। বই বেশি বড় না। অথচ ছোট্ট বইটাই কত রহস্য! এই রহস্যের উত্তর পেতে বইটি পড়ে ফেলুন।
বাংলাদেশে মেডিকেল থ্রিলার নিয়ে কি কাজ হয়? না হয় না। আমি যতদুর শুনেছি, বাংলাদেশের প্রথম মেডিকেল থ্রিলার এটি। একজন ডাক্তার হিসেবে লেখক ফুয়াদ আল ফিদাহ নিজের অবস্থানে থেকে সবথেকে ভালো দেয়ার চেষ্টা করেছেন। মেডিকেল থ্রিলারের মাপকাঠি কী আমি জানি না। মেডিকেল টার্মগুলোর যথার্থ বর্ণনা না দিলে সেগুলো সাধারণ পাঠকের জন্য দুর্বোধ্য, সেই দিকটা সযত্নে গড়ে নিয়েছেন লেখক। নিজে এই প্রফেশনের হওয়ায় আরও ভালো হয়েছে।
যে কোনো সময় ব্যতিক্রমী কিছু করতে গেলে প্রথমেই পাঠকের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে, এই জিনিসটা সব লেখকেরই মাথায় আসে। আবার নিজের মধ্যেও অস্বস্তি কাজ করে। পাঠক পজেটিভ ভাবে গ্রহন করবে কি-না এটাও চিন্তার বিষয়। কন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে লেখক করে দেখিয়েছেন। সব মিলিয়ে থ্রিলার হিসেবে একেবারে খুব ভালো বলবো এমনটা নয়। তবে লেখকের শ্রম আর একদম নতুন একটা জনরা নিয়ে কাজ করায় লেখক যে সাফল্য আর মেধা দেখিয়েছেন সে দিক থেকে ভালো বলতে দ্বিধা নেই।
থ্রিলার বইয়ের চরিত্রগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় আমার কাছে। এই বইয়ের শুরু থেকেই চমৎকার চরিত্রায়ন ছিল। রাফসান আর আদনান চরিত্রের পাশাপাশি বয়ে চলাটা গল্পে বাস্তবতার ছোঁয়া দিয়েছে। বিশ্বাসযোগ্য চরিত্রায়ন ছিল। সাধারণত দেখা যায় গল্পে নায়কের ভূমিকায় থাকা কিংবা নায়কের ঘনিষ্ঠদের কাতারে থাকা মানুষগুলো নানা বিপদ উতরে শেষ অবধি টিকে থাকে। এই গল্পে ব্যতিক্রম দেখে ভালো লেগেছে। এটা ভালো লাগারই বিষয়। অপরাধ জগত সবকিছু না দিলেও অনেক কিছুই কেড়ে নেয়!
সবশেষে বলবো দেশের প্রথম মেডিকেল থ্রিলার হিসেবে পরিচিত এই বইটি মিস করার মতো নয় তাই দ্রুত পড়ে ফেলুন।