নির্বাসন PDF Download সাদাত হোসাইন

‘নির্বাসন’ উপন্যাসটির রচয়িতা হলেন সাদাত হোসাইন। সমকালীন সময়ের সাহিত্যে সাদাত হোসাইন যে জায়গা করে নিয়েছেন তা অন্য কোন তরুণ লেখকের পক্ষে আদৌ সম্ভব কিনা তা এক বড় প্রশ্ন। সাহিত্যের জগতে পা দেয়ার পর থেকেই একের পর এক অসাধারণ উপন্যাস পাঠকদের উপহার দিয়ে চলেছেন লেখক।

প্রত্যেকবার বইমেলায় তার বই থাকছে সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তার তালিকায়। সাদাত হোসাইনের লেখায় মায়ার সাথে যেভাবে রোমাঞ্চের মিশ্রণ ঘটানো হয় তা সত্যিই যেকোনো পাঠককে মুগ্ধ করতে বাধ্য। ‘নির্বাসন’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৯ সালে, উপন্যাসটির প্রকাশক হলো ‘অন্যধারা প্রকাশনী’।

এই বইটিও লেখকের অন্যান্য বইয়ের মতই দীর্ঘ কিন্তু, পড়তে শুরু করলে এই দৈর্ঘ্যের বিষয় মাথায় আসে না। উপন্যাসটির বিষয় বস্তু খুব স্পর্শকাতর, যে কেউই উপন্যাসটি পড়ে ডুবে যেতে পারে গল্পের মাঝে। উপন্যাসটির গল্প শুরু হয় ঢাকা মেডিকেলের ছাত্র মনসুরকে তার বাবা ঢাকা থেকে নবীগঞ্জে ফেরত নিয়ে আসার মাধ্যমে।

তখন ঢাকার অবস্থা উত্তাল যখন তখন যেখানে সেখানে ঝামেলা শুরু হয়। তাই আজাহার খন্দকার তার ছেলেকে নিয়ে আর কোন ঝুঁকি নিতে চান না। এরপর বাসায় এসে কয়েকদিন থাকার পর মনসুর গোবিন্দপুর বন্ধুর বাসায় ঘুরতে গেলে সেখানে তার পরিচয় হয় কণার সাথে। কণার সাথে পরিচয়ের কয়েকদিনের মাঝে মনসুর তাকে চিঠির মাধ্যমে প্রণয় নিবেদন করে। উপন্যাসের অন্যতম বিশেষ চরিত্র হলো জোহরা।

সুবর্ণপুর বিলের পর জঙ্গল আর তারপরেই লস্করদের চর। সেই চরের ডাকাত দলের প্রধান হলেন তোরাব আলী লস্কর। তোরাব আলীর ছেলে সাত বছর আগে ডাকাতি করতে গিয়েছিল সোনাপুর বাজারে, সেখানে গ্রামবাসীর হাতে ধরা পরার পর সে আর ফিরে আসেনি তার কোন খোঁজ ও পাওয়া যায় নাই।

তোরাব আলীর সেই ছেলের নাম ছিল ফয়জুল। আর ফয়জুলের কন্যা হলো জোহরা। জোহরার জন্য তোরাব আলীর ছিলো অন্যরকম পরিকল্পনা, অন্য জীবনের স্বপ্ন। তোরাব জীবিকার জন্য নিজে যেসব করেছেন তোহরাকে সেসব করতে হবে না এই ছিলো তার স্বপ্ন। তোরাব চাননি এমন মায়াবী চেহারার তরুণীর জীবনটা লস্করের মত অতিবাহিত হোক।

কিন্তু নিয়তির কাছে সবাইকেই হার মানতে হয় আর এই মায়াবী চেহারার তরুণী এককালে হয়ে ওঠে এক প্রলঙ্গকরী দস্যু। যার প্রভাব লস্করদের চরে এতোটাই বেড়ে যায় যে, তোরাব আলীর ক্ষমতাও তার কাছে কম মনে হয়। এক সময় ডাকাতি করতে গিয়ে জোহরা মনসুরকে অপহরণ করে চরে নিয়ে আসে আবার অন্যদিকে কণা তার ও মনসুরের একমাত্র সন্তান মনের জন্ম দেয়।

সব মিলিয়ে উপন্যাসটি শেষ দিকে হয়ে ওঠে বেশ নাটকীয় ও রোমাঞ্চময়। আর মনসুর দুই বছর কাটিয়ে দেয় চরে বন্দী দশায় শেষ পর্যন্ত কী মনসুর আবার ফিরে আসতে পেরেছিলো তা জানতে হলে পড়তে হবে বইটি। বইটি পড়ে শেষ করার পরও কয়েকদিন বইটির রেশ যেন পাঠকের মাঝে থেকে যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top