নর্স মিথলজি নিল গেইম্যান অনুবাদ ফুয়াদ আল ফিদাহ PDF download (মিথলজিক্যাল ফিকশন)

মার্কিন লেখক নিল গেইম্যান একজন জনপ্রিয় লেখক। শর্ট ফিকশন আর নন ফিকশন লিখেছেন অসংখ্য। মিথলজি নিয়েও লিখেছেন অনেকগুলো। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর অসাধারণ সৃষ্টি নর্স মিথলজি। যা অনুবাদ হয়েছে বিশ্বের অসংখ্য ভাষায়। বাংলাতেও হয়েছে। আর তা করেছেন ফুয়াদ আল ফিদাহ। নাম শুনেই চেনার কথা নিয়মিত অনুবাদ পাঠকদের। তার অনুবাদ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সে ব্যাপারে পরে বলছি। যাই হোক, বইটা যারা পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপঃ সবে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি হয়েছে। মিমিরের কূপ থেকে এক চুমুক জল পান করে জ্ঞানী হতে চায় ওডিন। মিমির শর্ত জুড়ে দেয়, ওডিনের এক চোখের বিনিময়ে এক চুমুক জল পাওয়া যাবে! জ্ঞান লাভের জন্য এর চেয়েও বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি আছেন তিনি।

অ্যাসগার্ডকে বরফ দৈত্যদের কাছ থেকে সুরক্ষিত রাখতে হলে একটা উঁচু প্রাচীর তৈরি করতে হবে। এক আগন্তুক বলে, সে মাত্র তিন ঋতুর মাঝে এক অভেদ্য প্রাচীর বানিয়ে দিতে পারবে। বিনিময়ে সুন্দরী দেবী ফ্রেয়াকে বিয়ে করতে চায়। যে চাঁদকে দেবতারা দিন আর সপ্তাহের হিসাব-নিকাশ রাখতে আকাশে বসেছিল তাকেও চায়, সাথে সূর্যকেও। দেবতারা কী আগন্তুকের ছুঁড়ে দেওয়া শর্ত মেনে নেবেন?

দেবতাদের ঐশ্বর্যগুলোর মধ্যে চমৎকার এক নিদর্শন হলো মিওলনি- থরের হাতুড়ি। অ্যাসগার্ডকে সব রকমের বিপদের হাত থেকে সুরক্ষিত করে রাখে থরের হাতুড়ি। বরফ দৈত্য, দানব, ট্রল কিংবা যে কোনো ধরনের দানব, সবাই ভয় পায় এই হাতুড়িকে। একদিন চুরি হয়ে যায় সেই অস্ত্রটা। হাতুড়িটা চুরি করে এক দানব রাজা। হাতুড়ি ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে চায় সুন্দরী দেবী ফ্রেয়াকে। আর এই জায়গায় থরকে একটা বড় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। কী সেই পরীক্ষা?

এক জাদুকরের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলে লোকি। প্রাণ ফিরে পেতে চাইলে বিনিময়ে ইডুক আর অমরত্বের আপেল চায় জাদুকর। এদিকে ইডুনকে ফাঁদে ফেলে জাদুকরের হাতে তুলে দেয় লোকি। সাথে অমরত্বের আপেলগুলোও। বয়সের ছাপ অনুভব করলে ইডুনের কাছে গিয়ে অমরত্বের আপেল খেয়ে যৌবন ফিরে পান দেবতারা, ফিরে পান শক্তি। এখন দেবতাদের রক্ষা করবে কে? সে কি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে? রক্ষা করবে দেবতাদের?

এতটাই উত্তেজনা কর কাহিনি যে শুরুতে সমস্ত শরীরে এমন এক আমেজ ছড়িয়ে পড়ে, যে উত্তেজনা টগবগ করতে করতে নিয়ে যায় নর্স পুরাণের দেবতাদের নিয়তিতে; যাকে বলে র‍্যাগনোরক। তার আগে ওডিন, থর আর লোকিদের সাথে চষে বেড়িয়েছি নর্স পুরাণের অলিগলি।

প্রাচীনকাল থেকেই যে কোনো পুরাণের কাহিনীগুলোর সত্যতা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হয়ে আসছে। তাই পুরাণের ক্ষেত্রে সবসময় বিশ্বাস-অবিশ্বাসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হয় না। বিশ্বাস-অবিশ্বাসকে একপাশে রেখে কাহিনীগুলো উপভোগ করতে হয়। নর্স পুরাণের কাহিনীগুলো পড়ার সময় মনের ভেতর উঁকি দেওয়া সত্য-মিথ্যাকে একপাশে বন্দী রেখে তবেই পড়তে হবে। তাহলে উপভোগ্য হয়ে উঠবে এই বই।

এখানের গল্পগুলোর মাধ্যমে নর্স পুরাণ সম্পর্কে বিশদভাবে জানা যাবে তা কিন্তু না। তবে যা জানা যাবে তাই বা কম কীসের! লেখকের লেখার গভীরতা আরও ভাবাবে পাঠককে। কি গভীরভাবে ভাবেই না সব লিখেছেন!
আর ফ্যান্টাসি লাভারদের জন্য এরচেয়ে দুর্দান্ত বই আর হতে পারে ন।

এবার অনুবাদ নিয়ে কিছু বলি, ফুয়াদ আল ফিদাহ অনুবাদক হিসেবে অনেক পুরোনো। এই পর্যন্ত অনুবাদ করেছেন প্রায় আশি’র অধিক গ্রন্থ। একজন প্রাঞ্জল অনুবাদক হিসেবে তিনি বরাবরই সমাদৃত। যারা তার অনুবাদ পড়েছেন তারা ভালো করেই জানেন। আর যারা পড়েন নি তারা নির্দ্বিধায় পড়তে পারেন।

সবশেষে বলবো, মিথলজি নিয়ে আগ্রহ আছে, ফ্যান্টাসি পড়তে ভালোবাসেন তবে এই বই অবশ্যপাঠ্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top