অর্ধবৃত্ত PDF Download সাদাত হোসাইন

অর্ধবৃত্ত’ উপন্যাসটির লেখক হলেন তরুণ জনপ্রিয় সাহিত্যিক ‘সাদাত হোসাইন’। সাদাত হোসাইন একের পর এক অসাধারণ বই প্রকাশের মাধ্যমে বাংলার সাহিত্য অঙ্গনে নিজের অবস্তান একদম পাকাপোক্ত করে নিচ্ছেন। তার এ পর্যন্ত প্রকাশ হওয়া প্রত্যেকটি বই তরুণ পাঠক সমাজে বিপুলভাবে সমাদৃত হয়েছে।

এমনকি তরুণ পাঠক নয় শুধু সকল পাঠকই এখন তার বইয়ের আলোচনায় বিভোর। অর্ধবৃত্ত উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছে ২০২০ সালে। ‘অন্যধারা’ প্রকাশনী উপন্যাসটির প্রকাশক। বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা হলো ৩৮৪, যারস সাদাত হোসাইন এর লেখা পড়েছেন তারা জানেন, লেখকের বইগুলো একটু দীর্ঘই হয়ে থাকে।

কিন্তু একবার পড়তে শুরু করলে এই দৈর্ঘ্য কোন সমস্যাই মনে হবে না, বরং কখন উপন্যাস শেষ হয়ে যায় তা বোঝাও যায় না। উপন্যাসের মূল উপাখ্যান গড়ে উঠেছে মানুষের জীবনের সম্পর্কগুলোকে কেন্দ্র করে। পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে, সুষ্ঠুভাবে জীবনযাপন করতে হলে আমরা অনেক ধরনের সম্পর্ক স্থাপন করে থাকি।

প্রত্যেকটি সম্পর্কই আবার অন্যটির থেকে আলাদা হয়, কোনটিতে অন্তরঙ্গতা বেশি কোনটাতে কম, কোনটি শুধু মাত্রই প্রয়োজনের খাতিরে স্থাপন করা কোন কোনটি আবার নিতান্তই আবেগ অনূভুতি দিয়ে পরিপূর্ণ। সময় ও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যেকটি সম্পর্কের আবার পরিবর্তন ঘটে, এক সময় যেই মানুষগুলো কাছের ছিল তারা দূরে সরে যায়, আবার সময়ের সাথে অনেক নতুন সম্পর্ক জীবনের অন্তর্ভুক্ত হয়।

জীবনে সম্পর্কের এই সমীকরণ নিয়েই অর্ধবৃত্ত উপন্যাসটি রচিত হয়েছে। উপন্যাসটির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি যৌথ পরিবারের গল্প। এই যৌথ পরিবারের প্রত্যেকটি মানুষই ভিন্ন, প্রত্যেকটি মানুষের রয়েছে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামত। উপন্যাসটিকে সম্পর্কের একটি গোলকধাঁধা বললেও ভুল হবে না।

নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে পরপুরুষের দ্বারস্থ হয়, গড়ে তোলে অনৈতিক সম্পর্ক। আবার স্বার্থ রক্ষার তাগিদে হুট করেই সংসার বিদ্বষী মানুষ হয়ে ওঠে সংসারী। উপন্যাসের প্রত্যেকটি চরিত্রই আবার নিজেদের কর্মকান্ডকে সমর্থন করে বিভিন্ন ধরনের যুক্তি দাঁড় করাতে চায়।

উপন্যাসটিতে রয়েছে, আফজাল আহমেদ-মছিদা বেগমের সম্পর্ক, আছে রাফি-মুনিয়া-ফাফরের সম্পর্ক, আশফাক-আফসানার সম্পর্ক, মুকিত-নাদিয়া-সফিকের সম্পর্ক ও সুমি দিপুর সম্পর্ক। উপন্যাসটির মূল চরিত্র হিসেবে দেখানো হয়েছে মুনিয়াকে, যিনি কিনা একজন স্বার্থান্বেষী লোভী মহিলা।

যিনি নিজের স্বার্থ লাভের আশায় নিজের স্বামীকে দূরে সরিয়ে দিয়ে প্রভাবশালী পরপুরুষ রফিক সাহেবের দ্বারস্থ হয়, এবং তার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিন করে। দীর্ঘদিন এই সম্পর্ক চালানোর পর হঠাৎ এক সময় মুনিয়া বিরক্ত হয়ে নিজের বয়সের অর্ধেক বয়সের এক ছেলে রাফির সাথে আবার অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।

রাফি ছিল মুনিয়ার নিজের মেয়ের বান্ধবীর বড় ভাই। উপন্যাসের মূল চরিত্র মুনিয়ার ঘটনা বাদেও উপন্যাসের প্রত্যেকটি চরিত্রের এক একটি রগরগে কাহিনী একেক সময়ে ফুটে উঠে, শেষের দিকে উপন্যাসটি হয়ে ওঠে একদম অপ্রত্যাশিত ঘটনা দিয়ে ভরপুর, অনেকটা থ্রিলার এক পটভূমি জাগয়া করে নেয় উপন্যাসের শেষভাগে আর এসব ঘটনা জানতে হলে পড়তে হবে উপন্যাসটি। সমসাময়িক সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি উপন্যাস হিসেবে এটিকে নিঃসন্দেহে আখ্যায়িত করা যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top