একদম তরুণদের মধ্যে নসিব পঞ্চম জিহাদী অন্যতম জনপ্রিয়ও লেখক। এ পর্যন্ত মাত্র তিনটা বই প্রকাশিত হয়েছে যদিও, কিন্তু সবগুলোই পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত এখনো। তিননটা বই-ই ছোট ছোট। কিন্তু লেখকের অসাধারণ লিখনশৈলী আর বর্ণনা ভঙ্গীই মূলত লেখককে জনপ্রিয়তার শিখরে নিয়ে গেছে। তেমনই আরও একটা দারুণ বই হলো ‘অরিত্রিকা ওইখানে যেওনাকো তুমি’। কেমন যেন অদ্ভুত নাম! না পড়লে বলে বুঝানো যাবে না কি দারুণ বইটা। তাই যারা এখনো বইটা পড়তে পারেন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।
কাহিনী সংক্ষেপ
খুব সাধারণ একজন মানুষ শওকত। সামান্য একটা কেরানির চাকরি করে। বাইরে থেকে দেখে বিশেষ কেউ মনে হওয়ার কোন কারণ নেই। তার বস হলেন আনিসুজ্জামান। সবার কাছে বদরাগী হিসেবে পরিচিত এই লোকটা অফিসের সবার ওপরই চড়াও হয়, শুধু শওকত বাদে। এজন্য অন্যদের চক্ষুশূল সে, যেটা কী না খুবই স্বাভাবিক। একদিন হুট করে বস অফিসে তলব করলেন শওকতকে। শওকতকে করে দিতে হবে একটা ছোট্ট কাজ। আর কাজটা সঠিক ভাবে সম্পাদন করলেই হাতে পাবে কিছু অর্থ, যা সম্ভবত শওকতের মতো মানুষের জন্য পরম আরাধ্য বস্তু। কাজেই রাজি হয় শওকত। এরপরে সে সম্মুখীন হয় বিচিত্র কিছু অভিজ্ঞতার।
চৌধুরী বাড়ির ছেলে এহসান হঠাৎ নিজের সাথে নিয়ে আসে ছোট একটা শিশুকে, যার কী না একটা সমস্যা ছিলো। স্বভাবতই সমস্যার কথা শুনে সবার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াই পায় সে। নিজের মতো করে বড় করতে থাকে বাচ্চাটাকে। কী সেই সমস্যা? ছেলেটা কি সাধারণ মানুষ? সবকিছুর উত্তর যার কাছে আছে, তার কাছে কীভাবে পৌঁছানো যায়? নিজেকে বুঝতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত কতদূর যায় ছেলেটি? উত্তরটা কি এই পৃথিবীতে থেকেই পাবে, নাকি অন্য কোথাও?
বইয়ের শুরুটা হালকা একটু স্লো ছিল। কেমন যেন একটু জড়তা! যদিও এটা লেখকের বৈশিষ্ট না। এবং পরে ঠিকও হয়ে গেছে। বরাবরের মতোই লেখক তার অসাধারণ লিখনশৈলী দিয়ে আবার সব পুষিয়ে দিয়েছেন।
বইটা আসলেই দ্বিধাদ্বন্দে ফেলে দেয় পাঠককে, যে আসলে কোন জনরার বই পড়ছি৷ লেখকের গল্পশৈলী অসাধারণ। পড়লে বোঝা যাবে না যে এটি লেখকের ২য় বই! সড়গড় ভাবে পড়ে ফেলা যায়। তবে হূমায়ন আহমেদ এর বই এর স্টাইলে লিখা না। স্বকীয় একটা স্টাইল, যেটা খুব ভালো লেগেছে। এই বইটা একটানেই পড়েছি৷ সবচেয়ে ভালো লাগার একটা ব্যাপার ছিলো বইতে মাঝে মাঝেই কবিতার ব্যবহার। কবিতাগুলো লেখকের নিজেরই লিখা অত্যন্ত চমৎকার।
আমি শুরুতে একটা দিয়ে রেখেছি যেটা সবচেয়ে প্রিয়। জনরা নান ধোঁয়াশা থাকলেও আমার কাছে অতিপ্রাকৃত সাইফাই মনে হয়েছে কিন্তু সেটি বলার পরেও প্রশ্ন থেকে যায় আসলে বইটি সাইকোলজির কিনা! অনেকে অবশ্য হরর, সাইফাই কিংবা সামাজিক উপন্যাস বলতে পারেন৷ তাদের দোষ দেয়া যাবেনা। কিন্তু বইটা যে কোনো পাঠককে ভাবাবে…!
বইটা মূলত অতিপ্রাকৃত ধারার বলেই মনে হয়েছে আমার কাছে। সে যাই হোক, বইয়ের যে জিনিসটা আরও বেশি ভালো লেগেছে সেটা হলো বইয়ের চরিত্রায়ন। আগেই বলেছি বইটা কলেবরে খুব একটা বড় না। অবশ্য নসিব পঞ্চম জিহাদীর সকল বই-ই ছোট। যাই হোক এই ১৫০ পৃষ্ঠার বইয়ে লেখক যে অসাধারণ চরিত্রায়ন দেখিয়েছেন তা আজকালকার নতুন লেখলদের মধ্যে অনুপস্থিত। এছাড়া বইয়ের মূল প্রোটাগনিস্ট বেশ ইন্টারেস্টিং একটা চরিত্র।
সবশেষে বলবো, অন্যরকম কোনো অতিপ্রাকৃত ও আলাদা টাইপের বই পড়তে চাই এই বইটা আপনার জন্যই।
pdf কিভাবে ডাউনলোড করবো?