পাপেটমাস্টারস PDF Download মাহমুদুস সোবহান খান

মাহমুদুস সোবহান খানের সাথে আমার পরিচয় এই ‘পাপেটমাস্টারস’ বইটা দিয়েই। পরিচয়পর্বটা ভালোই ছিল! অর্থাৎ লেখক দারুন লিখেন। তবে তার এই অসাধারণ বইটা কোনো একটা কারনে সব পাঠকের হাতে পৌছায় না। কিন্তু যে একবার পড়েছে সে লেখকের ভক্ত হতে বাধ্য। দারুন এই বইটা যারা এখনো পড়েননি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটার পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপ

নগরায়ন যে শুধু মাটির ই দখল নিয়েছে তা কিন্তু না। মাটির পাশাপাশি সেটা আরেকটা জিনিসের ও দখল নিয়েছে – আকাশ। আজ থেকে ৫০বছর আগেও মানুষ বড় বড় শহরে থেকেও আকাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারতো। তারপর ধীরে ধীরে কৃত্রিম আলোর অকৃত্রিম আগ্রাসনে মানুষ আস্তে আস্তে আকাশ দেখতে ভুলে যেতে শুরু করল। নীল রিশাদ নামের এক তুখোড় এজেন্ট সৃষ্টি করেছেন লেখক। যা পাঠককে আরও একবার নতুন করে ভাবাবে।

‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন’ এর আদলে ‘এশিয়ান ইউনিয়ন’ গঠন যখন সুনিশ্চিত তখন হঠাৎ বেকে বসে বাংলাদেশ। রাষ্ট্র হিসেবে তাদের ভেটো ইউনিয়ন গঠন বানচাল করে দেই। যারফলে বৃহৎ এবং বহুবছর ধরে চল্মান পরিকল্পনায় ধ্বস নামে। বড়বড় দেশ গুলোর চাপের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরণেও অনেক চাপ দেখা দেই বাংলাদেশের জন্য। ‘নব্যবাংলা’ নামক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের উত্থান সরকারকে ব্যাকফুটে ফেলে দেই।

তাদের নিয়ন্ত্রণে যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ তখন মরার উপর খাঁড়ার ঘা এর মতন হয়ে আসে দেশের সর্বোত্তম আর দুর্ধর্ষ এজেন্ট নীল রিশাদের ‘নব্যবাংলা’ সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করা। ‘নব্যবাংলা’র উচ্চ পর্যায়ের নেতাকে ছেড়ে দিয়ে ফারার হয়ে যাই রিশাদ। সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে হয়ে যায় ফেরারি দেশদ্রোহী। কিন্তু কেন? হন্ডুরাসে হঠাৎ গ্রেফতার হয় দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকা রিশাদ। তাকে গ্রেফতার করে কোর্ট মার্শালের শাস্তি দেওয়া হয়। কিন্তু শাস্তি পাওয়ার পর জেলখানায় যাওয়ার পথে তাকে পালাতে সাহায্য করে ‘নব্যবাংলা’।

রিশাদ কে দিয়ে ভয়াবহ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাকে ভারত পাঠায় ‘নব্যবাংলা’র লীডার ম্যাক। ভারত থেকে শুরু হয় রিশাদের থ্রিলে ঠাসা যাত্রার। সকল রহস্য যেন জট পাকাতে শুরু করেছেন! এসকল রহস্যের সমাধান এবং ব্যাখ্যা জানতে দেরি না করে পড়ে ফেলতে হবে দারুন এই বইটি!

‘পাপেটমাস্টার’ বিভিন্ন ককন্সপিরেসি থিওরি নিয়ে গঠিত এক্টি স্পাই থ্রিলার। অসাধারণ বর্ণনার সাথে ছিল মারমার কাটকাট একশন। দেশের সবচেয়ে বুদ্ধিমান আর দুর্ধর্ষ স্পাই দেশের বিপক্ষে চলে যাওয়া কিভাবে সামাল দিবে ডিজিএফআই? লিখনীর সাবলীলতা পঠন কে করেছে আর ও সাবলীল। উপভোগ করছিলাম বেশ। বিশেষ করে বইটা শুরুর সময়ই ধরে নিয়েছিলাম একটা অসাধারণ কিছু পেতে যাচ্ছি। তবে উত্তেজনার পারদ শেষে আসতে আসতে কমতে থাকে। একশন থেকে সাইকোলজিক্যাল মারপেঁচ শুরু হয় বেশি। তবে বই পড়ার সময় একটা অসাধারণ রোলার কোস্টার রাইডে থাকবেন এটা নিশ্চিত।

চরিত্র বিশ্লেষণ

চরিত্র নিয়ে খুব বেশি কিছু বলার নাই কারন, চরিত্রও খুব বেশি না। তবে এই কম চরিত্র থাকার একটা ভালো দিক হচ্ছে, আমি সবগুলো চরিত্রকেই মনে রাখতে পারছিলাম। তবে সিবি আর আর র’এর মাঝে প্রায়শ ই প্যাচ লাগিয়ে ফেলছিলাম। শেষের দিকে যেইটাই হোক ধরে নিয়েছি ভারতীয় গোয়েন্দা।

বাকি চরিত্র গুলোও জোস। তবে জেনি চরিত্রটা আপনাকে মুগ্ধ করবে। আর মনে হয় রিশাদের বস ডিজিএফ আই প্রধান কে আরেকটু স্ক্রিনটাইম দিলে ভাল হত, পাশাপাশি ফারিহাকেও। এছাড়া আর তেমন খুঁত চোখে পড়েনি। সবশেষে বলবো, একটা অসাধারণ স্পাই থ্রিলার উপভোগ করতে চাইলে বইটা আপনার জন্যই!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top