বাংলাদেশের স্বনামধন্য একজন লেখক হলেন মোশতাক আহমেদ। তার লেখা সবগুলো উপন্যাস সবার কাছে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তিনি বরাবর পাঠকদের বোধগম্য উপন্যাস রচনা করেন। তার রচিত সবগুলো উপন্যাস, গল্প সবাই খুব সাদরে গ্রহণ করেছে। তিনি তার লেখায় বরাবর সহজ, সরল ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করেন। তাঁর উপন্যাসের মধ্যে কল্পনার পাশাপাশি বাস্তবতার ছোঁয়া পাওয়া যায়। তিনি ছোট থেকে বড় সব বয়সী পাঠকদের জন্য বই রচনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস এর মধ্যে “রোবটিজম” উল্লেখযোগ্য।
মোশতাক আহমেদ পেশায় একজন ডিআইজি। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তাঁর বই পড়ার প্রতি অনেক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। মূলত সেখান থেকেই তার লেখালেখির শুরু হয়। সবদিক দিয়ে মোশতাক আহমেদ কে একজন সফল কবি হিসেবে ধরা যায়। কারণ তাঁর রচিত ভ্রমনকাহিনী,উপন্যাস,প্যারাসাইকোলজিকাল উপন্যাস, গল্প, ভৌতিক কাহিনী, সাইন্স ফিকশন সবগুলো সবার কাছে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। অনেক পাঠকরাই আছে যারা হুমায়ূন আহমেদের পরের স্থানটি তাকে দিয়েছে।
“রোবটিজম” মোশতাক আহমেদের একটি জনপ্রিয় ও নামকরা সাইন্স ফিকশন উপন্যাস। বইটি প্রকাশ করে অনিন্দ্য প্রকাশনী। বইটি প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয় 2017 সালে। বইটিতে মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা রয়েছে 112টি। বর্তমান বাজারে বইটির মুদ্রিত মূল্য হল 150 টাকা।
কাহিনী সংক্ষেপ:
“রোবটিজম” মোশতাক আহমেদের একটি অন্যতম সাইন্স ফিকশন উপন্যাস। একে সায়েন্স ফিকশনের সাথে একটা ভালোবাসার উপন্যাস ও বলা যেতে পারে। এই উপন্যাসটি মাধ্যমে লেখক তার কল্পনার মাধ্যমে বাস্তবতার অনেক কথাই দেখিয়েছেন পাঠকদের।
ব্ল্যাক মিষ্ট্রি নামক রহস্যময় গ্রহ অভিযানের সময় এক ভয়ানক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হয় নভোচারী নিক কে। সে বুঝে উঠতে পারেনি ওই গ্রহে তাকে এ রকম বিপদের সম্মুখীন হতে হবে। সে ভেবেছিল খুব সহজ উপায়ে তার কার্যসিদ্ধি করে বের হয়ে আসতে পারবে। সে সেই বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারলেও পৃথিবীতে ফিরতে গিয়ে আরও ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়।
সে যখন পৃথিবী ত্যাগ করেছিল তখন পৃথিবী ছিল মানুষের দখলে আর এখন নাকি রোবটেরা দখল করেছে পুরো পৃথিবী। রোবটেরা চাচ্ছে না পৃথিবীতে কোন মানুষ মুক্ত থাকুক। রোবট রা চায় যে মানুষেরা তাদের হাতে বন্দী হয়ে থাকবে এবং তাদের কথামতো সব কাজ করবে। কিন্তু কিছু মানুষ তারা শুধু জাদুঘর কিংবা চিড়িয়াখানায় সংরক্ষণ করে রাখতে চায়।
এ অবস্থায় নিজের জীবন বাঁচাতে আর মানব সভ্যতা কে রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে ওঠে নিক। কিন্তু রোবটদের প্রধান লিমিক নাছোড়বান্দা। সে যা চায় তাই সে যে করেই হোক আদায় করেই থাকে। মানব সভ্যতা কে সে যে করেই হোক ধ্বংস করবেই। তাই নিষ্ঠুর অত্যাচার চালাতে শুরু করে জীবিত মানুষদের ওপর। আর তাতে মানব সভ্যতা হারিয়ে যেতে থাকে গভীর অন্ধকারে।
একসময় নিক নিজেও অনুধাবন করতে থাকে সত্যিই আর রক্ষা করা যাবেনা মানবসমাজকে একই সাথে বাঁচানো যাবেনা লিনি নামের অপূর্ব সুন্দর নারী কে। কারণ লিমিক কে ধ্বংস করার কোন উপায়ে তার জানা নেই। লিমিক সম্পূর্ণ আলোর তৈরি বিশেষ এক রোবট। তাকে ধ্বংস করার কোন প্রযুক্তি এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে তৈরি হয়নি।
শেষ পর্যন্ত লিমিক কী তার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে পেরেছিল? নিক কী নতুন কোন ধরনের শক্তি প্রয়োগ করতে পেরেছিল লিমিককে হত্যা করার ক্ষেত্রে? কী বা ঘটেছিল লিমিকের ভাগ্যে? টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ও অসম্ভব ভালো একটা বই এখনো যারা পড়েননি খুব তাড়াতাড়ি বইটি পড়ে ফেলুন। আশা করে অবশ্যই অবশ্যই ভালো লাগবে।