সপ্তম মানবী আফজাল হোসেন PDF download (ভৌতিক উপন্যাস)

অতিপ্রাকৃত কাহিনি পছন্দ অথচ আফজাল হোসেন’কে চিনেন না এমন পাঠক দুস্কর। অসাধারণ অতিপ্রাকৃত কাহিনী লিখতে আফজাল হোসেন এক ঈর্ষনীয় জায়গা দখল করে আছেন। দারুন সব গল্প দিয়ে পাঠকমহলে পরিচিত নাম তিনি। যদিও আজকাল খুব একটা প্রচার দেখা যায় না তার। সে যাই হোক, তার দুর্দান্ত অতিপ্রাকৃত থ্রিলার হলো সপ্তম মানবী। যারা এই দারুন বইটা পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন অনায়েসে।

কাহিনী সংক্ষেপঃ লাশ! আলগা মাটিগুলো হাত দিয়ে সরাতেই চোখে পড়ল লাশগুলো! মানে লাশ একটা নয়!
কী আশ্চর্য! লাশ একটি নয়, দুটো! এমন তো হবার কথা নয়। কাফনে মুড়ানো দুটো লাশ পাশাপাশি রাখা। কাফনের কাপড়ের বিবর্ণ মেটে রঙ দেখে মনে হচ্ছে, এই লাশ দুটো মোটেই সদ্য মৃতের নয়, বেশ কয়েক বছর আগেই মরেছে। অনেক অনেক পুরনো সেগুলো। অথচ উপর থেকে কবরটা দেখে মনে হয়েছিল, খুব বেশি হলে দুই কি একদিনের নতুন কবর!

কাঁপা কাঁপা হাতে কাফনটা সরিয়ে লাশের মুখ বের করলো শফিক। কি বিভৎস!
লাশ দুটোর মুখ দেখে তার চোখ রসগোল্লার মতো বড় হয়ে গেল। মারাত্মক শিউরে উঠল সে। এ কী ভয়ানক চেহারা! মানুষের মুখ বলে চিনতেই কষ্ট হচ্ছে যেন! মুখটা মমির মতো শুকনো চিমসানো। আর পুরো মুখই মুচড়ে চোয়াল ভেঙে তেড়াবাঁকা হওয়া। মোচড়ানো সেই মুখের উপর কোঁচকানো শুকনো খসখসে চামড়া এমনভাবে আবরনের মতো সেঁটে রয়েছে যে চোখের নিচের হাড়, নাক, চোয়াল ও কণ্ঠার হাড় এবং দাঁতের খাঁজগুলো যেন ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে। আহ্ কি বাজে।
বোজানো চোখ কোটরের গর্তের গহীনে দেবে গেছে। দেবে যাওয়া সেই গর্তের অন্ধকারে অদ্ভুত এক শূন্যতা ঘিরে রয়েছে।
বলা যায় মানুষের মুখমণ্ডলের আকৃতি বলতে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। দেখতে কিছুটা যেন লম্বাটে মুখের অদ্ভুত কোনো জন্তুর মতো লাগছে। কিন্তু কেন? এসব কি হচ্ছে?

বইয়ের প্রত্যেকটা পৃষ্ঠায় এক প্রকার উত্তেজনা রয়েছে। বই একটানায় শেষ করতে মন চাইলেও ধীরেসুস্থে বইটা শেষ করতে হয়েছে। কাহিনীর শুরুতেই গা ছমছম করা একটা ভাব আসবে আপনার ভিতরে। মনে হচ্ছে আমি এখনো বুনো ফুলের সুভাস পাচ্ছি। গভীর অরণ্যে হারিয়ে গেছি। বইটার শেষ যে কতটা নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক তা বইটি না পড়লে বুঝতেই পারবেন না। ভৌতিক আর অতিপ্রাকৃত সব ঘটনা মিলিয়ে এ যেন এক গা ছমছমে পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন লেখক। বলাই বাহুল্য দারুণ দক্ষতার সাথেই তা করেছেন।

লেখকের লিখনশৈলী আরেক ভালোলাগার বিষয়। খুব সুন্দর সাবলীল ভাবেই না অতিপ্রাকৃত ঘটনাগুলো একদম বাস্তবের আকার দিয়েছেন। পাঠকের মনে ঢুকিয়ে দিয়েছেন আদিম এক ভয়! যা আসলেই প্রশংসার দাবিদার। একদম মনে দাগ কাটার মত। যে ভয় খুব দ্রুতই ফুরিয়ে যায় না, রয়ে যায়…!

চরিত্র বিশ্লেষণঃ চরিত্র গঠন ছিল আরও দুর্দান্ত। বেশ কিছু চরিত্র ছিল, ওসি রমজান, এস আই ফারুক।
সাথে ফরেনসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম। মূল চরিত্রের পাশাপাশি ছিল খালেক সাহেব ও তার মেয়ে শিরিন সহ আরো কিছু চরিত্র রয়েছে। প্রত্যেকটা চরিত্র মনে গেঁথে যাওয়ার মত। আমি তো শিরিন চরিত্রের প্রেমেই পড়ে গেছিলাম! এতোটাই প্রভাবিত করেছে এই চরিত্রগুলো আমাকে।

যে বণর্না করেছে লেখক সত্যিই অসাধারণ দক্ষতায় চরিত্রগুলোকে বিল্ডআপ করেছেন লেখক আফজাল হোসেন। যেন কোনো ক্ষুত ধরতে না পারে কেউ! কিছু কিছু বিষয় ছিল মনে দাগ কেটে যাওয়ার মত।

সবশেষে বলবো, অসাধারণ একটা ভৌতিক উপন্যাস। যারা এসব পছন্দ করেন তাদের জন্য তো বটেই, যারা দারুন কিছু উপভোগ করতে চান তারাও নির্দ্বিধায় বইটা পড়ে ফেলতে পারেন।

1 thought on “সপ্তম মানবী আফজাল হোসেন PDF download (ভৌতিক উপন্যাস)”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top