লেখক নাজিম ঊদ দৌলা বর্তমান থ্রীলার জগতে এক পরিচিত মুখ। তার লেখার টুইস্ট, তার চিন্তাধারা পাঠকদের অভিভুত করে। তিনি যে শুধু গল্প উপন্যাস লিখেন তা কিন্তু না। নাটক সিনেমার স্ক্রিপ্ট লেখাতেই তার বেশ দখল রয়েছে। এছাড়াও পাঁচটিরও অধিক থ্রিলার উপন্যাস লিখেছেন। সেরকমই একটি হচ্ছে ‘স্কারলেট’। এই বইটাও বরাবরের মত জনপ্রিয়। যারা এই দারুন বইটা এখনো পড়তে পারেন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।
কাহিনী সংক্ষেপ
“মহামান্য রসায়নবিদ জু ফু তার অভিযান শেষে ফেরত এসেছেন। তিনি পেংলাই পাহাড়ের দ্বীপের সন্ধান পেয়েছেন। কিন্তু সেই দ্বিপে নামার জন্য তার অধিক লোকবল প্রয়োজন৷ এবার তিন সহস্র নর নারী নিয়ে যাত্রা হবে। তোমাদের মধ্যে যারা অভিযানে অংশ নিতে ইচ্ছুক, তারা রাজকীয় বইতে নাম লিখিয়ে যাবে।
এবার অভিযানে যাওয়ার জন্য দম্পতিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যেসব পরিবারের স্বামী -স্ত্রী উভয়েই অভিযানে যাবে , তাদের জন্য রয়েছে সম্রাটের তরফ থেকে বিশেষ পুরষ্কার । আর জিয়ানদান নিয়ে যারা ফিরে আসতে পারবে, তাদের জন্য থাকবে, সোনা -দানা, হীরে-জহরত, জমিসহ অঢেল সম্পদ পুরষ্কার৷ ঘোষণাটি এখানেই শেষ হলো।’
এদিকে ড. আইভান মেন্ডেস দাবী করছেন তার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা এমন এক অস্ত্রপাচার প্রক্রিয়া আবিস্কার করেছে, যার প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষের স্বাভাবিক আয়ু প্রায় দ্বিগুন বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কি মানবশরীরে এই প্রক্রিয়া প্রয়োগের অনুমতি দিবে? এদিকে একদল চাইনিজ ফ্যানাটিক উঠে পড়ে লেগেছে তাদের বিরুদ্ধে । হামলা করা হচ্ছে গবেষণা কেন্দ্রে, কিডন্যাপ করা হচ্ছে বিজ্ঞানীদের। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য কি? এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য ফিরে যেতে হবে খ্রিস্টের জন্মের ২০০ বছর পূর্বের প্রাচীন চীনে।
কিন ডাইনেস্টির প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট কিন সি হুয়াং মৃত্যু ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছেন। যাদুকর আংকি সেং তাকে এলিক্সার অফ লাইফের সন্ধান দিল যা পান করলে মানুষ হয় অমর । সম্রাট তার বিশ্বাসভাজন রসায়নবিদ জুফু’র নেতৃত্বে প্রায় তিন হাজার নর নারীর একটি দলকে পাঠালেন সেই এলিক্সারের সন্ধানে । কিন্তু বছরের পর বছর চলে গেল, তারা আর ফিরে এলো না৷ কেউ জানে না তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছিল । সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জড়িয়ে আছে একটি মেয়ের অস্তিত্বের সাথে৷ মেয়েটির নাম – স্কারলেট, খুব সাদাসিধে এক তরুণী যে নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছে একজন অভিশপ্ত মনুষকে৷
‘স্কারলেট’ মূলত একটি মেয়ের নাম। অবাক হওয়ার কিছু নেই। এটা ফিকশন। তাছড়া সাধারন কোনো কিছু না।
এই স্কারলেটের ভালোবাসার টানে একজন মানুষ প্রায় ২০০০ বছর ধরে অক্লান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে । কি হলো সবশেষে সেই লোকটি কি আসলেই পেল তার ভালোবাসা? এগুলো জানার জন্য বইটা পড়া৷ বইটিতে নানান ইতিহাস জড়িয়ে আছে। কাল্পনিক একটা প্লট হলেও সবটা বাস্তবিক। বইয়ে দুটো সময়ের চিত্র একসাথে এগিয়ে গেছে খ্রিষ্টপূর্ব ২২১বছর আগে এবং বর্তমান সময়। আধুনিক পৃথিবী আর প্রাচীন সভ্যতার এক মিশ্রন এই বই৷ আবার ও জানা দরকার, ঐতিহাসিক থ্রিলার আর ইতিহাস কিন্তু এক জিনিস না।
আমার কাছে বরাবর ই নাজিম ঊদ দৌলার লেখা ভালো লাগে। লেখায় এত টুইস্ট থাকে তাই। এই বইটি ও এমন ই। প্রথমে মনে হয়েছে সাধারন দুটি চিত্র বর্ণনা করেছেন তারপর যখন মিল খুঁজে পেয়েছি পুরো শকড্ হওয়ার মতো। বইটির প্রথমে একটা সুন্দর ভালোবাসায় ঘেরা স্বপ্ন পূরনের সংগ্রাম এর মতো লেগেছে। এরপর মাঝে একটা মেয়ের নিজের ইচ্ছে খেয়াল খুশিমতো বেড়ে উঠা। লাস্ট পেইজটা পড়ে এমন হয়েছে যে মনে হচ্ছে সবগুলো পতা পরার পরেও অনেক বাকি এরপরের গুলো ও জানতে ইচ্ছে হচ্ছে৷ এই পাঠকের চাওয়া গুলাই হয়তো লেখকের স্বার্থকতা।
সবশেষে বলবো, যারা একটু রিডার্স ব্লকে ভুগছেন, ভালো কিছু পাচ্ছেন না, তাদের জন্য বেস্ট হবে এই বইটা।