সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ PDF Download মনোয়ারুল ইসলাম

তরুণ প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় এবং পাঠকপ্রিয় লেখক ‘মনোয়ারুল ইসলাম’। প্রথম বকুলফুল ট্রিলজি দিয়ে বাজিমাত করেন তিনি। এরপর একে একে অনেক বই প্রকাশিত হয়। মূলত অতিপ্রাকৃত রহস্যোপন্যাস লিখেন। খুব যে টানটান উত্তেজনার তা না। কিন্তু তার লেখা পাঠককে মজিয়ে রাখে! তেমনই আরেক অতিপ্রাকৃত উপন্যাস ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ’। নামটাই অন্যরকম! এই দারুন বইটা না পড়ে থাকলে বইটার পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে।

কাহিনী সংক্ষেপ

মেয়েটার নাম রূপন্তী। সময়টা খারাপ তার। সারক্ষান কেমন জানি একটা ভয় মনের মধ্যে। মনে হচ্ছে, এই বুঝি সে এলো। এবার আর নিস্তার নেই। সব শেষ হয়ে যাবে। সবকিছু শেষ করে দিবে সেই অদৃশ্য শক্তি। কিন্তু কেন? কী ক্ষতি করেছে রূপন্তী? রূপন্তী কি সত্যিই এমন কিছু অনুভব করে? না-কি সব মনের ভুল? বাসার সবাই ভাবছে, মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে রূপন্তী।

আসলেই কি তাই? রূপন্তী কী ভাবে? রূপন্তীর স্বামী ফয়সালের ভাষ্য কী? ডাক্তারের পরামর্শ মতো রূপন্তীকে নিয়ে ফয়সাল চলে এলো বান্দরবন। কিছুটা হাওয়া বদলের চেষ্টা। রূপন্তী যদি একটু সুস্থ হয়, এই আর কি! কিন্তু এখানে এসেও বিপত্তি। রেমাক্রির বনে এমন কিছুর মুখোমুখি হয়েছিল দু’জন, যা ঠিকঠাক বর্ণনা করা যায় না। বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মাঝে যে দেয়াল থাকে, তা মুহূর্তেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। যা ঘটেছে, তা কি সত্যিই বিশ্বাসযোগ্য? না-কি মনের ভ্রম?

ছেলেটার নাম রূপম। ৩য় তে পড়ে। সবকিছু ঠিক থাকলেও পড়াশোনা ঠিকঠাক মনে রাখতে পারে না। নামিদামি স্কুলের পড়াশোনার চাপেই কি না, রূপমের বন্ধুবাধবও নেই তেমন একটা। এরই মাঝে বাগানে খুঁজে পেয়েছে একটি কালো বিড়াল। নোংরা, হিংস্র, দেখলেই ভয় লাগে – এমন বিড়ালটির জায়গা হয়েছে রূপমের ঘরে। রূপম নিজেই বিড়ালটির নাম রেখেছে কিটি। কিটিকে নিয়ে জমে উঠেছে ঘোর রহস্য। কোনো এক অশুভ ইঙ্গিত দিচ্ছে সে। বিড়াল, অথচ কাচা মাংস চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছে। রক্তও বাদ যাচ্ছে না।

ওদিকে দিন দিন শরীর খারাপ হচ্ছে রূপমের। ওজন হারিয়ে চেহারা এতটুকু হয়ে যাচ্ছে বাচ্চা ছেলেটার। চোখের নিচে কালি পড়ছে। কিন্তু কেন? কীসের ভয় তাড়া করে বেড়ায়? এর সাথে সেই বিড়ালের সম্পর্ক-ই বা কী? রূপমের ড্রয়ারে যে অদ্ভুত মূর্তিটা, তার পিছনের রহস্যই বা কি? জানতে ইচ্ছে করে?

জক্কু হাজি ব্যাক্তিটি রহস্যময়। গ্রামের মান্যগণ্য ব্যক্তি হিসেবে তার পরিচয়। সবাই তাকে হুজুর বলেই ডাকে। জিন তাড়ানোতে তার জুড়ি নেই। দুপুরে পুকুর পাড়ে হুজুরকে একা কথা বলতে দেখা যায়। কার সাথে কথা বলে? তিনি যাদের সন্তান বলেন তারা-ই বা কারা? তাকে কেউ ঘাটায় না। অদ্ভুত ক্ষমতা সম্পন্ন জক্কু হাজির মোকাবেলা এবার হিরণের সাথে। হিরণ জানে না কার সাথে সে লাগতে এসেছে। তাই এবার তার শেষ আসন্ন। জক্কু হাজি মনে করেন তিনি পাপ করেছেন। কী সেটা? কখনো কি জানা যাবে? জহিরের ছেলেটাই বা কোথায় হারিয়ে গেল?

মনোয়ারুল ইসলামের বইয়ের প্লটগুলো বিশাল কলেবরের হয় না কখনো। ছোট ছোট চিন্তায়, অল্প অল্প করে গল্প আগায়। এভাবেই শেষ হয় যায়। তবুও পড়তে আরাম লাগে। এক বসাতেই বইটি পড়ে ফেলা যায়!

লেখকের সবগুলো বই পড়েছি বিধায় তার লেখার সাথে ভালোমতোই পরিচয় আছে। তাই খুব সহজেই বলতে পারি লেখকের লেখা এখন আরও পরিণত। আগে পরিণত ছিল না তেমনটা না, এখন আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বর্ণনাগুলো প্রানবন্ত, চরিত্র বিশ্লেষণে আরও দক্ষতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই বইটা আমার ভালো লেগেছে। বেশি বড়ো কলেবরের না হওয়ার পরও পাঠককে টেনে রাখতে পারবে।

সবশেষে বলবো, হালকা মজিয়ে মজিয়ে কোনো রহস্যোপন্যাস পড়তে চাইলে বইটা অবশ্যই পড়বেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top