শূণ্যবিন্দু মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পি PDF download (থ্রিলার)

মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পি, একজন থ্রিলার লেখক হিসেবে পরিচিতই বলা যায়। তার চারটা থ্রিলার বই বেড়িয়েছে। বই চারটাই কেমন যানি খুবই ছোট! একদম এক বসায় পড়ে ফেলা যায় এমন। তার লেখনীর সাথে যাদের পরিচয় আছে তারা ভালো করেই জানেন কেমন লিখেন তানি। তার নতুন একটি দারুণ বই হলো ‘শূণ্যবিন্দু’। বইটা যারা এখনো পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।
কাহিনী সংক্ষেপঃ স্বপ্ন! আমরা সবাই-ই কম বেশি স্বপ্ন দেখে থাকি ঘুমিয়ে গেলে। ঘুম ভেঙে গেলে কারও কারও স্বপ্নটা মনে থাকে, কারও বা আংশিক আবার অনেকে তো স্বপ্ন দেখেছিল কিনা সেটাই মনে করতে পারে না। আমরা অনেকেই স্বপ্ন দেখে থাকি যেমন কোনো পাহাড় বা বিল্ডিংয়ের চূড়া থেকে পড়ে যাচ্ছি, কখনো বা উড়ছি, আবার কখনো সাপের কামড় খাচ্ছি, নয়তো কুকুরের দৌড়ানি। যেনো কোনো থ্রিডি মুভি চালিয়ে দেয়া হতো আমাদের চোখের সামনে। কেমন হতো যদি আমরা সেই পড়ে যাওয়া বা কামড় খাওয়া গুলো আটকাতে পারতাম। পারতাম স্বপ্নগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে। যদি পারতাম পৃথিবীর সকল বাধা নিষেধগুলো স্বপ্নে প্রয়োগ করতে তাহলে কেমন হতো আমাদের জীবন যাত্রা? আমূল পাল্টে যেতো নাকি বেশ সুখে থাকতাম?
লুসিড ড্রিম নামটা অনেকের কাছেই নতুন আবার অনেকে হয়তো কিছুটা জানেন এই বিষয়ে। বইয়ের কাহিনীটা লুসিড ড্রিম নিয়েই। লুসিড ড্রিম হলো যে স্বপ্নে আপনি অনুভব করতে পারেন যে আপনি স্বপ্ন দেখছেন, স্বপ্নের কার্যাবলী আংশিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। চেতন ও অবচেতন মন দুইয়ের মাধ্যমেই এমনটা ঘটে থাকে। স্বপ্নগুলো হয় বেশ পরিস্কার, আনন্দ ও ব্যথার অনুভূতিও হয় তীব্র, সবকিছুই প্রায় বাস্তবেরই প্রতিচ্ছবি।
কোনো পিছুটান না থাকা এক হতাশ যুবকের কাহিনী এই শূণ্যবিন্দু।
আগেই বলেছি লেখকের চতুর্থ বই এটি। আবারও লেখকের সেই পুরোনো চরিত্র সাইকোলজিস্ট জিব্রান। যার সাথে পরিচয় প্রথম থেকেই।
জিব্রান যিনি রিসার্চ করছেন লুসিড ড্রিমিং নিয়ে। তো এভাবে একদিন দেখা পেলো জীবন নিয়ে হতাশায় ভোগা এক যুবকের। যে বাস্তব জীবনের থেকে স্বপ্নের জীবনকেই বেশি পছন্দ করে। নিজের স্বপ্নকে মাঝেমধ্যেই সে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, করতে পারে যা ইচ্ছে তা, উপভোগ করতে পারে জীবনকে। কিন্তু লুসিড ড্রিমের জগতে বাস করা মোটেও সোজা কাজ নয়, যা বাস্তবতা ও স্বপ্নের মাঝে পার্থক্য করতে পারে না!
এভাবেই দেখা স্বপ্নে দেখা পেলো কোনো কুয়াশায় মোড়ানো জগতের। কি আছে কুয়াশার আড়ালে? আসলেও কি কিছু আছে নাকি শুধুই শুন্যতা? কিংবা ‘শূণ্যবিন্দু’!
বইয়ের যতই গভীরে যাচ্ছিলাম ততই যেন আগ্রহ তুঙ্গে উঠছিলো। নতুন নতুন কিছু ঘটছে, নতুন কোনো থ্রিলের আভাস পাচ্ছি। যা এক অসাধারণ অনুভূতির সৃষ্টি করছিলো।
স্বপ্নের জগৎ ও বাস্তব জগতের সাথে বেশ সামঞ্জস্য রেখে চলছিল। এক এক অধ্যায়ে এক এক রকম ফিল পাচ্ছিলাম। বেশ সুন্দর ভাবে লিখনশৈলী সম্পন্ন করেছেন লেখক। কিন্তু বইটা শেষটা যেনো বেশ তাড়াহুড়োতে শেষ হয়েছে এই বিষয়টাই বেশি খারাপ লেগেছে। শেষ আরও বড় করা যেতো। শেষে লেখক বেশ কিছু টুইস্ট রেখেছিলেন কিন্তু লেখকের কাছ থেকে আরও বেশি টুইস্ট, থ্রিল আশা করেছিলাম। কিন্তু সেটা না পেয়ে হতাশ হইনি। কিন্তু শেষটা যে একটা তাড়াতাড়িই করা হয়েছে সেজন্য বেশি আক্ষেপ!
সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার আমার ভীষণ পছন্দের। সেক্ষেত্রে এই ঘরনার এই বইটিও আমি বেশ উপভোগ করেছি। উপভোগ করার মতোই। এক বসায় শেষ করার যায়। মোটেও বোর করবে না। যদি না ড্রিমিং নিয়ে লেখা কিছু টার্মগুলো বুঝতে কারো কষ্ট হয়। কষ্ট হওয়ার কথা নয় অবশ্য!
সবশেষে বলবো, এক বসাতেই একটুও বিরক্ত না হয়ে দারুণ কোনো বই পড়তে এই বইটা অবশ্যই পড়া উচিত।