সূর্য তুমি সাথী PDF Download আহমদ ছফা

সূর্য তুমি সাথী PDF Download আহমদ ছফা, সূর্য তুমি সাথী উপন্যাসটি আহমেদ ছফা রচিত যা আমাদের ওয়েবসাইটে পিডিএফ আকারে পাওয়া যাচ্ছে। কিভাবে সম্পূর্ণ ফ্রিতে বইটি ডাউনলোড করবেন তা জানার জন্য আমাদের লেখাটি পড়া লাগবে। সর্বপ্রথম এই কাহিনী সংক্ষেপ এবং লেখক সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

সূর্য তুমি সাথী

সূর্য তুমি সাথী উপন্যাসটি আহমেদ ছফার প্রথম উপন্যাস। এই উপন্যাসের মাধ্যমেই সাহিত্য জগতে প্রবেশ করেন কথার জাদুকর আহমেদ ছফা। মাত্র ২১-২২বছর বয়সে এই বইটি রচনা করে তিনি নিজের লেখক সত্তার পরিচয় তুলে ধরেন দেশের সাহিত্যাঙ্গনে।

বইটি ১৯৬৪-৬৫ সালে রচিত হলেও প্রকাশিত হয় ১৯৬৭ সালে। অনবদ্য এই বইটির প্রকাশক স্টুডেন্ট ওয়েজ, ঢাকা।

বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শিবু কুমার শীল।
এতসব তথ্য পড়তে গিয়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন “বইটি কেন পরবো?” তাহলে আপনার জন্য তৈরী রয়েছে বইটি পড়ার অনেকগুলো জোরদার কারণ।

সূর্য তুমি সাথী কাহিনী সংক্ষেপ

স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজের মানুষের জীবনযাত্রা এবং রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবাহিত সকল সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অবস্থার আসল চিত্র বুঝতে হলে এই বইটির বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন।

বইটির প্রতিটি চরিত্রই সেই সময়ের আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রতিনিধিত্ব করে। তৎকালীন সমাজের সাম্প্রদায়িক বৈষম্য এই বইটির উপন্যাসের অন্যতম প্রধান একটি বিষয়। গল্পের মূল চরিত্র হাসিম একজন ধর্মান্তরিত পিতার সন্তান।

তার পিতার ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনাটি সমাজের চোখে অতি ঘৃণিত একটি অপরাধ। সেই অপরাধের সাজা হাসিমকেও পেতে হয় জীবনের প্রতিটি পলে পলে। জীবনের সকল সামাজিক এবং মানবিক অধিকারগুলো থেকে তাকে সর্বক্ষণ বঞ্চিত করা হয় তারা ধর্মান্তরিত মুসলমান বলে।

সাম্প্রদায়িকতার শিকলে বাঁধা তাদের জীবন। এই উপন্যাসটির আরো একটি মূল উপাদান শ্রেণী বৈষম্য। সমাজের কথিত উঁচু শ্রেণীর লোকদের কাছে খেটে খাওয়া মানুষের জীবন যেন হেলার বস্তু। নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে অন্যের জীবন বিপন্ন করতে ভাবে না কানা আফজল,খলু মাতবরের মতো মানুষেরা।

তাদের নিজেদের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রাণ দিতে হয় গ্রামের মানুষের। তবু তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস কারই হয়ে ওঠেনা। অত্যাচার, অবিচারকেই তারা নিয়তি বলে মেনে নেয় এবং নিজেদের সংসার চালানোর লড়াইয়ে জীবনটাকে উৎসর্গ করে দেয়।এর বাইরেও যে কিছু করার আছে, জীবন নিয়ে ভাবার আছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আছে এসব কথা তাদের চিন্তাতেও আসে না।

অনাচার অবিচারই হয়ে যায় তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী।উপন্যাসটিতে পুরুষ চরিত্রের পাশাপাশি নারী চরিত্র গুলোও সমানভাবে কাহিনী উপস্থাপনে ভূমিকা রেখে গেছে। হাসিমের দাদী, স্ত্রী সুফিয়া এবং জোহরা’র মত চরিত্র গুলো থেকে আমরা সেই সময়ের নারীদের জীবন সম্পর্কে ধারণা পাই।

হাসিমের দাদী শৈলবালা তাঁর মৃত পুত্র এবং হাসিমের প্রতি নিজের স্নেহ প্রকাশ করতে পারেননা শুধুমাত্র সমাজ এবং ধর্মের বাঁধার কারনে। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি এই বাঁধার কাছে আটকে থাকতে পারেননি। হাসিমের স্ত্রী সুফিয়ার মৃত্যুর পর নবজাতক সন্তানের মধ্যে তিনি তাঁর মৃত সন্তানেরই ছায়া দেখতে পান এবং সেখানেই থেকে যান মাতৃহারা নবজাতকটির দেখভাল করার জন্য।

বাধা বিপত্তি, সংষ্কার কোনকিছুই যে মাতৃহদয়ের চিরায়ত স্নেহধারা বন্ধ করতে তারই প্রকাশ পেয়েছে এই চরিত্রটির মধ্যে দিয়ে।
নারী চরিত্রের মমতার এবং ভালোবাসার মূর্তমান উদাহরণ এই উপন্যাসটির অন্যতম নারী চরিত্র সুফিয়া। এ উপন্যাসে সুফিয়া হাসিমের স্ত্রী৷ সমাজের চোখে অত্যন্ত নিচু শ্রেণীর বলে গণ্য এবং অবহেলিত হাসিমকে ভালোবাসা এবং মমতা দেওয়ার মতো এই মানুষই হাসিমের জীবনে আছে।

সকল দুঃখ, দূর্দশা মেনে নিয়েও হাসিমের সাথে হাসি মুখে সংসার করে চলে সুফিয়া। কাহিনী প্রবাহের এক পর্যায়ে হাসিমের সন্তান গর্ভে ধারণ করে সে এবং সেই সন্তান জন্ম দিয়ে নারীজীবনের স্বার্থকতা প্রমান করে। উপন্যাসটির আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ নারী চরিত্র জোহরা।

এই চরিত্রটি তৎকালীন গ্রাম বাংলার নারীজীবনের অভিশপ্ত দিকটিরই যেন প্রতিনিধিত্ব করে। নিজের চাচার স্বার্থ হাসিলের উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে হতে নিজের সত্তাই যেন অপরিচিত হয়ে ওঠে তার কাছে। এক পর্যায়ে দারোগার লালসার শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়ে পরলে সমাজের কাছে সে স্বীকৃতি পায় কুলটা নারী হিসেবে।

উপন্যাসের এই পর্যায়ে জোহরার জীবনকাহিনী পাঠকদের মনে চরিত্রটির জন্য করুণারসের সৃষ্টি করে।এত দুঃখ-দুর্দশার মাঝেও গ্রামের মানুষের মনে আশা এবল সাহসের সঞ্চার করতে গ্রামে আসেন কৃষক সমিতির কিছু মানুষ। মহান এই মানুষ গুলোর আবির্ভাব হয় গ্রামে যখন ওলাউঠা মহামারী আকার ধারন করেছে।

ঘরে ঘরে লোক মারা যাচ্ছে কিন্তু তাদের সৎকারের লোক পাওয়া যাচ্ছে না শুধুমাত্র অজ্ঞতা এবং কুসংস্কারের কারণে। ঠিক তখনই দেবদূতের মতো হাজির হনমনির আহমেদ, হিমাংশু বাবু মান্নান এবং কেরামত ভাইয়ের মতো কিছু চরিত্র।

তারা ধর্মীয় এবং সামাজিক সকল সংষ্কার উপেক্ষা করে মানুষের সেবায় ঝাঁপিয়ে পরেন। শুধু তাই নয়। তারা গ্রামের লোকদের শেখান অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। যদিও এই কাজ সহজ ছিলো না। দীর্ঘদিনের অজ্ঞতা এবং অসচেতনতার শিকড় উপড়ে ফেলতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় তাদের।

অবশেষে তাদের নেতৃত্বে গ্রামের লোকেরা সিগারেট কোম্পানির গড়ে ওঠাকে ঠেকিয়ে দিতল সক্ষম হয়, সক্ষম হয় নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে।এই উপন্যাসটির প্রতিটি বাঁকে বাঁকে মিশে আছে তৎকালীন গ্রামের মানুষের জীবনধারা।

লেখকের চমৎকার উপস্থাপনশৈলী এবং হৃদয়গ্রাহী বর্ণনা পাঠকে মন ছুঁয়ে যাবে। তারা সেই সমাজটাকে, সময়টাকে যেন নিজেদের চোখের সামনে দেখতে পাবেন।

উপন্যাসের কাহিনী প্রবাহ চরিত্রগুলো জীবনের কোন প্রান্তে নিয়ে যায় তা জানতে অবশ্যই বইটি পড়তে হবে। বইটি পড়ার পর পাঠক যে হতাশ হবেন না এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
বই পড়ুন,বইকে ভালোবাসুন।

সূর্য তুমি সাথী পিডিএফ ডাউনলোড

আহমেদ ছফা এর লেখা বিখ্যাত উপন্যাস সূর্য তুমি সাথী আমাদের ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ ডাউনলোড করতে নিচের দেওয়া লিংকে ক্লিক করুন।

বাংলা সাহিত্যের সকল ধরনের বই আমাদের ওয়েবসাইট থেকে ফ্রিতে ডাউনলোড করা যায়। প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত লিখিত সকল ইসলামিক এবং উপন্যাসের বই এখানে পাওয়া যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top