বৃত্তবন্দী তাকরীম ফুয়াদ PDF download (সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার)

তাকরীম ফুয়াদ একজন তরুণ প্রজন্মের থ্রিলার লেখক। স্পাই থ্রিলার দিয়ে লেখালিখি শুরু করেন তিনি। তবে এখন পাঁচটার ও অধিক বই বেড়িয়েছে তার। তাকে অনেকে আন্ডাররেটেড লেখক বলে থাকেন। কারন তার লেখাগুলো যতটা প্রশংসা পাবার যোগ্য ঠিক ততটা পায়না। তবে পাঠকগন ভালোমতোই চিনে তাকে। মানে যারা থ্রিলারের সাথে বহুদিন ধরে সম্পৃক্ত। তার সব থেকে বেশি জনপ্রিয় থ্রিলার হচ্ছে বৃত্তবন্দী। সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারও বলা যায় এটাকে। সে যাই হোক, বইটা যারা এখনো পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।
কাহিনী সংক্ষেপঃ ‘সৃষ্টির শুরুতে ছিলো শূণ্যতা। আর সেই শূণ্যতার মাঝেই ছিলো সৃষ্টিজগতের বসবাস। এভরিথিং ওয়াজ ইন এক্সিসটেন্স ইন দ্য উম্ব অফ নাথিং। শূন্য থেকেই শুরু। কেমন অদ্ভুদ শোনাচ্ছে, তাই না? অথচ এটাই সত্যি। আমি জানি এটা সত্যি। আমি জানি।’
ছয় মাসের ব্যবধানে দু দুটো খুন হলো। মৃতদেহে রেখে যাওয়া হলো কিছু অদ্ভুদ চিহ্ন। খুন দুটো কি একই মানুষ করছে, নাকি ভিন্ন মানুষ? সেটাও একটা প্রশ্ন। তদন্তে নামলো পিবিআই এর হোমিসাইড সেকশনের ইন্সপেক্টর মুহিত এবং এসআই ইরান। তাদের সবারই রয়েছে কিছু গোপন অতীত যেটা কেউ জানে না। খুন দুটোর অদ্ভুদ প্রকৃতি মুহিত ও ইরানকে দ্বন্ধের মধ্যে ফেলে দিলো। তাই তারা সাহায্য নিতে বাধ্য হলো ক্রিমিনাল সাইকোলজিস্ট ড.জামিউল পাশার। আদেও রহস্য ভেদ হয়েছিল কি? দুটো কি নিছকই কোনো খুনের ঘটনা? নাকি জড়িয়ে আছে অন্য কোনো বড় রহস্য? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে পড়ে ফেলতে হবে বইটি।
গল্পটা মূলত তিনটা খন্ডে বা তিনটা টাইমলাইনে বিভক্ত। প্রথম খন্ডটা পড়ে ধরেই নিছিলাম আমি খুনি কে বুঝতে পারে গেছি। সেটা অস্বাভাবিক না। কিন্তু দ্বিতীয় খন্ড পড়ার পর বুঝলাম যে আসলে গল্পের মূল রহস্যটা ভিন্ন। আর সেটা আমি এখনো ধরতে পারিনি। তাই পুরো দমে তৃতীয় খন্ড পড়া শুরু করলাম, ধীরে ধীরে সব পরিষ্কার হতে লাগলো! আবার, খুনি কে তাও বুঝে ফেল্লাম। কিন্তু বইয়ের একদম শেষ পাতায় এসে যে টুইস্টটা লেখক দিয়ে রেখেছেন তা পাঠককে একদম চমকে দেবার মত।
গল্পের প্রত্যেকটা চরিত্রেরই অতীতের কথা বলা হয়েছে,যার কারণে মাঝে গল্পটাকে খানিকটা একটু ধীরে গতি সম্পন্ন লেগেছিল, কিন্তু শেষে পুরো গতিশীল ছিলো গল্পটা, আর সবশেষটা একদম অভাবনীয়।
সব দিক বিবেচনায় বলা চলে অসাধারণ একটা বই। লেখকের শব্দচয়ন আর বাক্যগঠন ছিল আসলেই প্রশংসার যোগ্য।
চরিত্র বিশ্লেষণঃ প্রথমেই বলি মুহিতের কথা, পিবিআই এর হোমিসাইড সেকশনের ইন্সপেক্টর। তার কাজের ক্ষেত্রে সে খুব দক্ষ। তবে এক অতীত তার জীবনকে অনেকটা পাল্টে ফেলেছে। সহজেই কাউকে সে এখন বিশ্বাস করে উঠতে পারে না। তবে কাজের ক্ষেত্রে তার দাম্ভিকতা অস্বীকার করার উপায় ও নেই।
এর পর আসে ইরান। তার ভালো নাম আরাফাত। কাছের লোকদের কাছে সে অবশ্য ইরান নামেই পরিচিত। তার ও এক ভয়াবহ অতীত আছে। এর থেকে বেরোতেই বাবার প্রতিপত্তির প্রভাব ছাড়া নিজেকে প্রমানের বা নিজেকে শাস্তি দিতে এক প্রকার জীবন বাজী দিয়ে এই ফিল্ডে জয়েন করে সে। বয়স অনুযায়ী সে খুব চৌকসতার প্রমান দেয়!
আরও একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলেন ড. জামিল পাশা। তিনি একজন ক্রিমিনাল সাইকোলজিস্ট। মজার ব্যাপার হলো তার ও একটি ভয়াবহ অতীত আছে। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তবে সময় পেলে তার বাসায় মুহিত ও ইরানের সাথে কিছু সময় তাদের চলতি কেস ও তাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলেন।
এছাড়া কাহিনির প্রয়োজনে আরও নানা চরিত্র এসেছে। তবে এই তিনজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সবশেষে বলবো, অসাধারণ একটা থ্রিলার। সব দিক দিয়েই দুর্দান্ত। তাই বইটা যারা পড়েন নি পড়ে ফেলতে পারেন।