টেল নো ওয়ান হারলান কোবেন| অনুবাদ সায়েম সোলায়মান PDF download (থ্রিলার)

টুইস্ট মাস্টার হিসেবে হারলান কোবেন এক নামে পরিচিত। তার অসাধারণ সব থ্রিলার আছে এবং সেগুলো একেকটা বেস্টসেলার হয়েছে। অনুদিত হয়েছে নানা ভাষাতে। তেমনই টুইস্টে ভরপুর একটা বই হলো ‘টেল নো ওয়ান’। এই বইটার অনুবাদ করেছেন বর্তমানের স্বনামধন্য অনুবাদক সায়েম সোলায়মান। যারা তাকে চিনেন তাদের আলাদা করে তার ব্যাপারে কিছু বলে দিতে হবে না। তবে এই ব্যাপারে পরে বলছি। তো বইটা যারা এখনো পড়তে পারেন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপঃ হঠাৎ নাম-পরিচয়হীন কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে একের পর এক অদ্ভুত মেইল আসছে ডক্টর বেকের ই-মেইলে। আর সেগুলো দেখে রীতিমতো ঘাবড়ে যাচ্ছেন বেক। মেইলে বেক আর তার স্ত্রী এলিজাবেথের পরিচয়-বার্ষিকী পালন, কিস টাইমের কথা ইত্যাদি উল্লেখ আছে! এসব কথা বেক আর এলিজাবেথ ছাড়া অন্য কারো জানার কথা নয়। আজ থেকে আট বছর আগে স্ত্রী এলিজাবেথকে নিয়ে নিজেদের তেরোতম পরিচয়-বার্ষিকী পালন করতে লেক চারমেইনে যাওয়ার পর সেখানে কিডন্যাপ হয় এলিজাবেথ। পরে এলিজাবেথের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাহলে এতবছর পর কে বা কারা মেইলগুলো পাঠাচ্ছে? কেনই বা মেইলগুলো পাঠানো হচ্ছে তার কাছে?

এদিকে লেক চারমেইনের পশ্চিম দিকে দুটো পুরনো লাশের সন্ধান পায় পুলিশ। ফরেনসিকদের রিপোর্ট অনুযায়ী, পাঁচ থেকে আট বছর আগে মারা গিয়েছিল লাশ দুটো। লাশ দুটোর সাথে একটা বেসবল ব্যাটও পাওয়া যায়। সেই ব্যাটের গায়ে লেগে থাকা শুকনো রক্তের সাথে ডক্টর বেকের ব্লাড গ্রুপের মিল পাওয়া যায়! তাহলে কি লাশ দুটোর খুনি ডক্টর বেক? এবার নিজের স্ত্রীকে খুন করার জন্য পুলিশের সন্দেহ পুরোপুরি গিয়ে বর্তায় বেকের ওপর। ফলে পুলিশের সাথে এফবিআই-ও উঠেপড়ে লাগে বেকের পেছনে। আট বছর পর এলিজাবেথের কেসটা নতুন করে শুরু করে পুলিশ। এরপর একেকটা ঝড় এসে বিধ্বস্ত করে দিচ্ছে ডক্টর বেককে। নাজেহাল অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বেকও নেমে পড়ে সেই যুদ্ধে? আর এর শেষ কোথায় গিয়ে হয়েছে তা জানতে বইটা পড়ে ফেলতে হবে!

টুইস্ট মাস্টারের বই মানেই তো টুইস্টের ছড়াছড়ি। তাই বলে শেষে এসে এটা কি হলো! টাইপ টুইস্ট দিয়েছেন। পুরোপুরি থ বনে যাওয়ার মত। একদম শেষে যে টুইস্টটা দিয়েছেন, সেটা রীতিমতো ১৮০ ডিগ্রী এঙ্গেলে মাথাটাকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। এভাবে ঘোল খাইয়ে দেবে সেটা কল্পনাতীত ছিল।

গল্পের গাঁথুনি এককথায় দুর্দান্ত ও মজবুত। রহস্য, থ্রিল, সাসপেন্স, টুইস্ট কী নেই? সবই আছে। বইটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠককে আকৃষ্ট করে রাখার মতো উত্তেজনাপূর্ণ। লেখক কোনো কিছুর কমতি রাখেননি। পর্যাপ্ত পরিমাণের টুইস্ট ছিল।
তবে আচমকা ধেয়ে আসা টুইস্টগুলো হজম করতে প্রচন্ড বেগ পেতে হয়েছিল। অন্যদের ক্ষেত্রে কেমন মনে হয়েছে আমি জানি না, তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, লেখক কাহিনী বিল্ডআপ করতে একটু বেশি সময় নিয়েছেন। সেটা যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে। শক্ত ভিত্তি পেয়েছে উপন্যাসটা। গল্পের শুরুটা ধীরগতির হলেও সময়ের সাথে সাথে গতিবেগ দ্রুত হয়েছিল। সেই গতিবেগ বুলেট গতিতে পাঠককে নিয়ে যাবে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত। আর বইটা শেষ করার পর যে কেউ বলতে বাধ্য হবে এমন টুইস্টের বই খুব কমই আছে! শেষটা ছিল একদম পারফেক্ট। মাথা ঘুড়ানোর জন্য যথেষ্ট।

এবার অনুবাদ নিয়ে কিছু বলি, সায়েম সোলায়মান অনুবাদক হিসেবে বহু বছর ধরে পাঠক মহলে পরিচিত। সেবার অনুবাদ দিয়ে কাজ শুরু করেন। অর্ধশতাধিক বই অনুবাদ করে ফেলেছেন ইতোমধ্যে। তার মত প্রাঞ্জল অনুবাদ করেন হাতে গোনা কয়েকজনই। বর্তমানে সেরা অনুবাদকের লিস্ট করলে তিনি অবশ্যই উপরের দিকে থাকবেন। যারা তার অনুবাদের সাথে পরিচিত তারা সেটা ভালো করেই জানে!

সবশেষে বলবো, অসাধারণ টুইস্টে ভরপুর বই। না পড়লে মিস। আসলেই মিস!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top