সাইন্স ফিকশন

দ্য বোহেমিয়ান গ্রোভ মার্ক ডাইভ অনুবাদ এম.জে.বাবু PDF download (ফ্যাক্টস এন্ড ফিকশন)

তরুণ থ্রিলার লেখক এম. জে. বাবুকে আমরা সকলেই কম বেশি চিনি। তার সব মৌলিকই কম বেশি জনপ্রিয়। নিজের লেখনী আর অসাধারণ সব প্লট দিয়ে পাঠকের মনও জয় করেছেন বহু আগে। তবে তার একটি অনুবাদ গ্রন্থও আছে, দ্য বোহেমিয়ান গ্রোভ। তিনি অনুবাদক হিসেবে কেমন তা পরে বলছি। এই বইটি অনেকটা নন ফিকশন। কিন্তু বেশ চিত্তাকর্ষক! বিষয়বস্তু হলো গুপ্ত সংঘ! সুতরাং ইন্টারেস্টিং তো হবেই। বইটা যারা পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপঃ আমরা সবাই কম বেশি সকালেই ইলুমিনাতি কিংবা ফ্রিম্যাসনের মতো গুপ্তসংঘের নাম শুনেছি। তাদেরকে নিয়ে ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়ায় হাজার হাজার গুজব। এই ফ্রিম্যাসন এবং ইলুমিনাতিরাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে আমেরিকা সহ পুরো পৃথিবীকে শাসন করতে চায়! পৃথিবীটাকে তারা নতুন করে সাজাতে চায়, প্রতিষ্ঠা করতে চায় নিউ ওয়াল্ড অর্ডার। তবে এই গুপ্তসংঘের আগেও একটা গুপ্তসংঘ আছে। হ্যা, আপনারা ঠিকই শুনছেন। যে গুপ্তসংঘটি আমেরিকাকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শিখেছিল। কিভাবে আমেরিকা পৃথিবীকে শাসন করবে এটা তারা ভেবেছিল। এই সংঘটি ২য় বিশ্বযুদ্ধ তারপর জাতিসংঘের জন্ম কিংবা পরমাণু বোমার নির্মানের পরিকল্পনা সবগুলোর পিছনে রয়েছে। এরাই হলো সেই বোহেমিয়ান ক্লাবের সদস্যরা!

ক্লাবের কয়েকজন সদস্যের নাম—

১.রিচার্ড নিক্সন,
২.ক্লিন্ট ইসটউড
৩.হেনরি কিসিঞ্জার
৪.রোনাল্ড রিগ্যান
৫.ওয়ালটার ক্রোনকাইট
৬.জর্জ ডাব্লিউ বুশ সহ আরো অনেকে।

বোহেমিয়ানরা এই গ্রোভে এসেই তাদের পৃথিবী পরিচালনার পরিকল্পনা গুলো করেছিল। যেখানে কোনো সাংবাদিক যেতে পারে না,কোনো প্রকার ক্যামেরা নিয়ে কেউ যেতে পারে না,কোনো ভিডিও রেকর্ড করার অনুমতি সেখানে ছিল না।এই গ্রোভে বড় বড় ব্যাবসায়ী, রাজনীতিবীদ, ধনীরা ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারে না।এখানে প্রতি বছর প্রায় ১০০০ ধনী এবং ক্ষমতাবান পুরুষরা ছুটি কাটানোর জন্যে একত্রিত হয়। যারা এই গ্রোভে প্রবেশ করতো তাদের প্রবেশের জন্য প্রচুর টাকা দিতে হতো। যেটা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।

এই গ্রোভটি বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এখানে যারা সদস্য হয়ে আসে তারা সেখানে ব্যাবসায়িক এবং রাজনৈতিক আলাপ আলোচনা ছাড়াও বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালন করেছিল। এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘ক্রিমেশন অফ কেয়ার রিচুয়াল’। যেখানে একটা পেঁচার মূর্তির সামনে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের পুত্তলিকা তৈরি করে সেটাতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
এছাড়াও তারা অনেক খারাপ কাজের সাথে সেখানে লিপ্ত ছিল। যেমন: পতিতাবৃত্তি, সমকামিতা, মাদক সেবন,উলঙ্গ হয়ে চলাফেরা করা ইত্যাদি। যা আপনি এই বইটা ভলোভাবে পড়লেই বুঝতে পারবেন।

লেখক এবং মিডিয়া অ্যানালিস্ট মার্ক ডাইস প্রায় ১০ বছর তদন্ত আর গবেষণা করে বইটি লিখেছেন। এই কষ্টের ফল বইটি পড়লেই বুঝতে পারবেন। বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক সুন্দর ভাবে গল্প এগিয়ে নিয়েছেন লেখক। বইটি পড়তে আমার একটুও বিরক্ত লাগেনি। বইটা আমার মনোযোগ এমন ভাবে আকর্ষন করেছিল যে আমি বইট পড়া অবস্থায় একবারও চেয়ারে বসা থেকে উঠিনি। দুর্দান্ত সব তথ্য আর আলোচনার পাশাপাশি তিনি বইয়ে বিভিন্ন প্রমান স্বরুপ কিছু পিকচার তুলে ধরেছেন, যা বইটিকে আরো ইন্টারেস্টিং করে তুলেছে।

এবার অনুবাদ নিয়ে কিছু বলি, অনুবাদক হিসেবে নামটা নতুন। কিন্তু কাজটা কিন্তু অতটাও নতুন নয়। এর আগেও করেছেন, কিন্তু বই আকারে পরিচিতি পায়নি হয়তো। তাই একদম আনকোরা ভেবে খারাপ হতে পারে ভাবলে সেটা মস্ত বড়ো ভুল হবে। দারুণ প্রাঞ্জল অনুবাদ। বেশ সাবলীল বলা চলে। কিছু জায়গায় একটু আটকালেও তাতে তেমন কিছু হবে না। নির্বিঘ্নে পড়ে যাওয়া যায়।

সবশেষে বলবো, গুপ্ত সংঘ নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে তাদের জন্য দারুণ একটা বই তো বটেই।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *