দ্য এন্ড অভ ইটারনিটি (চিরন্তনের অন্ত) PDF Download আইজাক আসিমভ

সায়েন্স ফিকশন পড়তে ভালোবাসেন অথচ ‘আইজাক আসিমভ’ এর নাম শুনেন নি এমন পাঠক পাওয়া দুষ্করই বটে। বর্তমানের একজন সেরা বেজ্ঞানিক কল্পকাহিনির লেখক হিসেবে ধরা হয় এই আইজাক আসিমভ’কে। তাঁর আরেক দারুণ সৃষ্টি ফাওন্ডেশন সিরিজ। সে যাই হোক, লেখকের ‘দ্য এন্ড অভ ইটারনিটি’ বইটা অনুবাদ হয়েছে। আর অনুবাদ করেছে বর্তমানের সেরা একজন অনুবাদক ফুয়াদ আল ফিদাহ। অর্থাৎ লেখক আর অনুবাদক দুজনকেই সেরা বলা যায়! আর এই দারুন বইটা যারা এখনো পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ ফাইল পড়ে ফেলতে পারেন।
কাহিনী সংক্ষেপ
বর্তমান ও অতীত শতাব্দীগুলোতে অনেকটা বিনা বাধায় যারা ভ্রমণ করে বেড়ায় তারা ‘ইটারনাল’। অ্যান্ড্রু হারলান সেই ইটারনালদের মধ্যেই একজন প্রয়োগবিদ। সময়ের উপর নজর রেখে মানবজাতির সুবিধার্থে পরিবর্তন করে দেয় অতীতের সকল প্রতিবন্ধকতাকে যেন ভবিষ্যতে কোনো বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হতে না হয়।
কিন্তু অচিরেই বদলে গেল সব। সমস্যার শুরু হলো তখন যখন হারলান পড়লো এক অ-ইটারনাল নারীর প্রেমের মায়াজালে। বর্তমান বাস্তবতাতেও নেই সেই নারী। অর্থাৎ অতীত যদি নিজের মতো করে চলে তবে কখনোই জন্ম নিবে না সে। নিজের ভালোবাসাকে ফিরে পেতে হারলান নিজেই ইটারনাল ধ্বংস করার জটিল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলো। কিন্তু শেষ পরিণতি কী সুখকর হবে? সাধারণত সেটা তো হয় বা! বাকিটা জানতে হলে পড়ে ফেলুন ‘দ্য এন্ড অভ ইটারনিটি’।
আমি সাধারণত সায়েন্স ফিকশন পড়ি না। না পড়ার মূল কারণ হলো বিজ্ঞানের অনেক জটিল বিষয়াদি আমার বুঝতে বেগ পেতে হয়। আর আমি অতটাও বিজ্ঞান প্রিয় না। যদিও আমি সায়েন্সের স্টুডেন্ট! তাছাড়া বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ না থাকায় অনেক কিছুই জানি না বা বুঝতেও পারি না। ফলে এই ঘরনার বইগুলো আমি এড়িয়ে যাই। কিন্তু এই বইটা এড়াতে পারলাম না। বইটার ফ্ল্যাপ আসলে ভালো লেগে যাওয়ায় এড়ানো সম্ভব হয় নি। না হয়ে অবশ্য ভালোই হয়েছে!
বিজ্ঞান যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য বইটা দারুণ হলেও, বিজ্ঞানের সাথে ভালো সম্পর্ক নেই এমন মানুষদের জন্য বইটা নয়!
বইটার প্রথম দিকে কিছুটা বিরক্তিকর লাগলেও, বইটার মাঝামাঝিতেই আমার আকর্ষণের কারণ হয়ে দাঁড়াল। বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো ওতো ভালোভাবে না বুঝলেও কাহিনি কোন আঙ্গিকে চলছে কিংবা কী ঘটছে তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল না। ছোটোখাটো ব্যাপারগুলোও সহজে ধরতে পারছিলাম। ফলে বইটা বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে।
কিছু মাথা ঘুড়িয়ে দেবার মত টুইস্ট তো ছিলই সাথে বইয়ের শেষটা ছিল একেবারে অনন্য! না পড়লে সেটা বুঝতে পারবেন না! আইজাক আসিমভের যারা পাঠক তারা ভালোমতোই জানেন যে তিনি ডিটেইলস দিয়ে লিখতে পছন্দ করেন। এই বইটাও তার ব্যাতিক্রম না। তথ্য তো আছেই সাথে আছে বৈজ্ঞানিক কিছু বিশ্লেষণ। আর উনার লিখনী জোশ!
চরিত্র বিশ্লেষণ
চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে, ফিঞ্জ চরিত্রটাকে যেভাবে প্রেজেন্ট করতে চেয়েছিলেন লেখক সেভাবে করতে পারেননি। চরিত্রটাকে বেশ স্ট্রং ভেবেছিলাম প্রথম অংশে। এমনকি মাঝামাঝিতেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছিল। কিন্তু শেষে এসে পুরো ব্যাপারটাই যেন উল্টে গেল। পরবর্তীতে ফিঞ্জকে বলির পাঁঠা বলে মনে হয়েছে। স্ট্রং পারসোনালি ভাবটা ছিল না। এছাড়া বাকি সবার ক্যারেক্টর দারুণ ছিল।
এবার অনুবাদ প্রসঙ্গে কিছু বলি, অনুবাদক ‘ফুয়াদ আল ফিদাহ’ অনুবাদ সাহিত্যে এক পরিচিত নাম। তার অনুবাদ পড়ে বিরক্ত হয়েছে এমন পাঠক নেই। বেশ অনেক বই অনুবাদ করেছেন তিনি। সাথে বেড়িয়েছে নিজের মৌলিক গ্রন্থ। সে যাই হোক, অনুবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
সবশেষে বলবো, সায়েন্স ফিকশন লাভারদের জন্য মাস্ট রিড একটা বই। আর যারা সেরকম পছন্দ করেন না তারাও নির্দ্বিধায় পড়ে দেখতে পারেন।