তমিস্রা PDF Download জাবেদ রাসিন

এখনকার একজন জনপ্রিয় হয়ে হলেন জাবেদ রসিন। হ্যাঁ, অনেকেই হয়তো চিনবেন না। তবে তার একটা সিরিজ আছে নাম ‘তমিস্রা ভুবন’। একজন থ্রিলার পাঠক হলে এই নামটা অবশ্য শুনে থাকার কথা! সিরিজের প্রথম বই এবং লেখকের প্রথম বই হলো ‘তমিস্রা’। লেখকের এক অসাধারণ সৃষ্টি এই তমিস্রা ভুবন। বইটা যারা এখনো পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপ

গ্রামাঞ্চল। সারাদিন বৃষ্টি। দিনেও রাতেও। সাথে অস্বাভাবিক ঘটনা। কোন গল্প যদি এগুলো দিয়ে শুরু হয়, তাহলে শুরু থেকেই সেখানে ভয়ের আবহ বিরাজ করে। বৃষ্টির সিক্ততার সাথে যখন খুন ও ভৌতিক ঘটনা যুক্ত হয়, ভয়ের আবেশ তখন ভিন্ন একটা মাত্রা লাভ করে। জাবেদ রাসিনের তমিস্রাতেও ঠিক একই ব্যাপার ঘটেছে।

শুভপুর। শান্ত নিস্তরঙ্গ একটা প্রত্যন্ত গ্রাম। সেই গ্রামেই হঠাৎ করে শুরু হলো আলোড়ন সৃষ্টিকারী কিছু ঘটনা। অস্বাভাবিক একটা খুন হলো। গ্রামেরই এক যুবককে বিভৎস ভাবে কে বা কারা খুন করলো, তার কোন ক্লু-ও থাকলোনা। স্বাভাবিক ভাবেই শুভপুরের লোকজনের মনে জন্ম নিলো ভয়াবহ অস্বস্তি।

গ্রামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি’র মেয়ে অদ্ভুত ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লো। ডাক্তার বদ্যি কবিরাজ – কারো থেকেই এই অবস্থা থেকে উত্তরণের কোন পথ পাওয়া গেলো। ষোড়শী মেয়েটার অসুখের অদ্ভুত লক্ষণ গুলো দিনকেদিন বেড়েই চললো। সাধারণ কোন নিয়মে মেয়েটার যখন রোগমুক্তি ঘটলোনা, তখন ইরফান নামের এক যুবক প্রচলিত নিয়মের বাইরে শুরু করলো মেয়েটার চিকিৎসা। যে কিনা একাধারে ডাক্তার ও জ্বিনের ওঝা।

শুভপুর গ্রাম থেকে উধাও হয়ে গেলো এক রহস্যময় লোক। কোন এক অজানা ক্ষমতার জন্য লালায়িত হয়ে সে ছুটে বেড়াচ্ছে অন্ধকার অলিগলিতে। প্রত্যেকটা মুহূর্তে বাড়ছে তার ক্ষমতার তৃষ্ণা। শেষ পর্যন্ত সে সফল হলে বদলে যাবে পুরো পৃথিবীর ভাগ্য! কি সেই রহস্য? জানতে হলে পড়ে ফেলতে হবে পুরো উপন্যাসটি।

জাবেদ রাসিন যখন এই বই লিখেন তখন তিনি একেবারেই নতুন। কিন্তু নতুন হিসেবে যে প্লটে গল্প বুনেছেন তা সত্যিই প্রশংসার। বিস্তৃত এই প্লট নিয়ে এগিয়ে গেছেন অনেকটা পথ। ছোট ছোট বেশ কিছু ভুলভ্রান্তি ছিলই। এবং প্রথম বই হিসেবে থাকাটাই স্বাভাবিক। তমিস্রা’র প্লটটা অনেক বিস্তৃত হলেও দুই এক জায়গা কিছুটা অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। কয়েক জায়গায় একটু কম বর্ণনা দিলে আরও বেশি ফুটত।

যাই হোক, তমিস্রা উপন্যাসটাকে একটা হরর থ্রিলার। এবং এটাকে যাথাযথ ভাবে পরিচিত করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে যে বিষয়টা বেশি প্রভাব ফেলেছে তা হলো ভৌতিক পরিবেশ সৃষ্টি। পুরো কাহিননীর পট জুড়ে ভৌতিক ও রহস্যময় ঘটনা গুলো ঘটেছে বর্ষণমুখর রাত বা সন্ধ্যার দিকে। বাংলাদেশের গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে বৃষ্টি এমনিতেই আলাদা একটা আবহ সৃষ্টিকারী ব্যাপার।

আর সেটার সাথে যদি অন্য পৃথিবীর ভয়কে এক ফ্রেমে বাঁধা যায় তাহলে সেটার আবেদন একেবারেই ভিন্নরকম হয়ে পাঠকের কাছে ধরা দেয়। ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টিতে লেখক বেশ মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। তবে শেষের দিকে অতিপ্রাকৃত ব্যাপার গুলো সংঘটনের বর্ণনা অনেকটা বেখাপ্পা মনে হয়েছে। এক্সরসিজমের যে বর্ণনা লেখক দিয়েছেন, সেটা আমার মতে আরো চিত্তাকর্ষক হতে পারতো। বেশ সহজে যে ব্যাপারটা ঘটে যায়, সেটাতে একটু খটকা থাকেই।

তমিস্রা’র শুরু ও মাঝামাঝিতে যে স্রোতে ঘটনাবলি এগিয়ে গেছে, শেষের দিকে লেখার গতি সাথে কাহিনীর গতি একেবারে রোলারকোস্টারের মতো এগিয়ে গেছে। লেখকের লিখনশৈলী বেশ ভালো লেগেছে। আর যদি বলি, প্রথম হিসেবে একদম খাসা হয়েছে। এবং চরিত্রায়ননের দিকে যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েছেন লেখক প্রথম থেকেই

সবশেষে বলবো, অসাধারণ এই তমিস্রা ভুবন সিরিজ। এবং সিরিজের এই বইটা অবশ্যই পড়া উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top