ভাঙনের পর PDF Download হারুকি মুরাকামি

‘ভাঙনের পর’ উপন্যাসটির লেখক হলেন জগত বিখ্যাত ঔপন্যাসিক ‘হারুকি মুরাকামি’। বর্তমান যুগে যতজন সাহিত্যিক এক নামে পাঠক সমাজে পরিচিত তার মধ্যে মুরাকামি অন্যতম। সেই ৭০ এর দশকের শেষভাগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যত বই এই লেখক প্রকাশ করেছেন প্রত্যেকটি পাঠক সমাজে বিপুলভাবে সমাদৃত হয়েছে।

পরাবাস্তবতা, জাদুকরী আবহের সৃষ্টি, ট্র্যাজেডি এবং মানব জীবনের সম্পর্কের বেড়াজাল হলো তার উপন্যাস সমূহের মূল বিষয়বস্তু। মুরাকামির উপস্থাপনার ধরণ তার উপন্যাসগুলোকে নিয়ে গেছে অন্যন্য এক উচ্চতায়। সাধারণত উপন্যাস রচনা করে থাকলেও ভাঙনের পর হলো লেখকের একটি ছোট গল্পের সংকলন গ্রন্থ।

মোট ছয়টি ছোট গল্প নিয়ে এই বইটি প্রকাশিত হয়েছিল। বইটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। লেখকের অন্যান্য বইয়ের মত এইটিও পরে ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয় ২০০২ সালে এবং পরে পৃথিবীর আরও অনেক ভাষায় অনূদিত হয়।

বাংলা ভাষায়ও বইটি অনূদিত হয়েছে আমাদের দেশে বইটির প্রকাশক হলো ‘রোদেলা প্রকাশনী’ এবং অনুবাদ করেছেন ‘কাসিফুর রহমান’। বইটির প্রত্যেকটি গল্পই গড়ে উঠেছে ১৯৯৫ সালের কোবে ভূমিকম্পের ওপর ভিত্তি করে। ভূমিকম্প ও তার পরে মানুষের জীবনে এর ভয়াবহতাই মূলত প্রাধান্য পেয়েছে বইটিতে।

প্রথম গল্পটিতে জুনপেই নামক এক ভদ্রলোককে কেন্দ্র করে কাহিনী গড়ে উঠেছে। জুনপেই সায়োকো নামক বান্ধবীর প্রেমে পড়েছিল কিন্তু সে তার মনের ভাব প্রকাশ করার আগেই টাকাটসুকি জুনপেইয়ের বন্ধু সায়োকোকে বিয়ে করে ফেলে এবং তারপর তাদের একজন সন্তান হয় যার নাম রাখা হয় সালা।

এতকিছুর পরেও জুনপেই সেই দম্পতির খুব কাছের একজন বন্ধু হিসেবে থেকে যায় এবং নিজের ভালো লাগার কথা আর জুনপেইকে বলে না। দ্বিতীয় গল্পের মূল চরিত্র হলো একজন অজ্ঞাতনামা মহিলা যিনি কিনা ভূমিকম্পের পর তার স্বামী কোমুরাকে ছেড়ে চলে যায়। কেননা, তার মনে হয়েছিল তার স্বামীর তাকে দেয়ার মত কিছু নেই।

তার স্বামী অনুভূতিহীন একজন মানুষে পরিণত হচ্ছে দিন দিন। স্ত্রী ছেড়ে চলে যাবার পর কোমুরার জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। এরপর কোমুরা কিছু পরাবাস্তব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে থাকে। আরেকটি গল্প যার শিরোনাম হলো ‘থাইল্যান্ড’, সেই গল্পের মূল চরিত্র হিসেবে একজন মহিলা ডাক্তারকে দেখানো হয় যিনি কিনা ভূমিকম্পের সময় থাইল্যান্ডে ছুটি কাটাচ্ছিলেন কিন্তু এই ভূমিকম্পের ঘটনা শোনার পর থেকে তার জীবনে বিভিন্ন ধরণের পরিবর্তন আসতে শুরু করে।

এভাবেই প্রত্যেকটি গল্প আলাদা হলেও জাপানিদের জীবনে কতটা আমূল পরিবর্তন এসেছিলো তা লেখক অতি নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। বইটিতে উল্লেখিত সকল চরিত্রই অন্যন্য এবং যেকোনো পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করতে বাধ্য। এককথায় বলতে গেলে বইটিতে যে ছয়টি গল্প রয়েছে প্রত্যেকটিই এক একটি শিল্পকর্ম। লেখক শুধু উপন্যাসই নয়, ছোট গল্প রচনা করেও যে পাঠকদের উদ্বেলিত করতে পারেন এই বইটিই তার প্রমাণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top