জাবেদ রাসিন বর্তমানের একজন স্বনামধন্য থ্রিলার সাহিত্যিকদের একজন। বেশ অনেকগুলো থ্রিলার তিনি পাঠককে উপহার দিয়েছেন। হরর থ্রিলার, সায়েন্স ফিকশন এসব লিখতে তার জুরি নেই। বরাবরই দারুন লিখেন তিনি। আর এই থ্রিলার জগতে প্রথম পরিচিতি পান ‘তমিস্রা ভুবন’ সিরিজের মাধ্যমে। এই সিরিজের এই পর্যন্ত পাচ টি বই আছে। সিরিজের দ্বিতীয় বই ‘অসূয়া’। তমিস্রা যারা পড়েছেন এইটা তাদের অবশ্যপাঠ্য! সুতরাং বইটা না পড়ে থাকলে এর পিডিএফ পড়ে ফেলুন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে।
কাহিনী সংক্ষেপঃ ইরফান ছেলেটা নতুন আরেকটি কেস পেয়েছে। শুভপুরের সেই ঘটনা তার মনে এখনো প্রভাব বিস্তার করেছে। এবারে এক ব্যবসায়ীর পিচ্ছি মেয়ে। অদ্ভুত অদ্ভুত কিছু স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন দেখে প্রচুর ভয় পায়। মা-বাবাকে পাশে ঘুমাতে দেয় না। সেই ব্যবসায়ী তার এক কর্মচারীর মাধ্যমে ইরফানের খোজ পায়। ইরফান প্রথমে বাড়িতে এসে কিছু অনুভব করে না। সাধারণত যদি অশরীরী কিছু থেকে থাকে সেটা ইরফান অনুভব করতে পারে। কিন্তু এবার সেটা হয়না। তাই সে পিচ্ছি মেয়েকে দেখে কিছু সন্দেহ করে আর তার বাবা-মা কে বলে ঘর থেকে সব পুতুল ছবি সরিয়ে ফেলতে।
পরের দিন আবার ফোন আসে ইরফানের কাছে। ইরফান তাড়াতাড়ি সেই বাড়িতে যায়। আর গিয়ে দেখে পিচ্ছি মেয়েটার আলমারিতে একটা পুতুল রাখা। যদিও আগেরদিন নাকি সব পুতুল সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। আর এতে বুঝে যায় ইরফান যা সে সন্দেহ করেছিল তা সত্যি। পিচ্ছি মেয়েটাকে কেউ যাদু করেছে। আর যাদুটা করা হয়েছে এই পুতুল দিয়ে কারন পুতুলের গায়ে এমন কিছু আলামত পাওয়া গেছে যা থেকে এটা বলা যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই ব্যাপারে ইরফানের ধারণা নেই তেমন। আর যদি যাদু সম্পর্কে বা যাদুকরকে নিয়ে কোন ধারণা না থাকলে, যদি কিছু করে সেটা হিতে বিপরীত হতে পারে। যাদুকর তার উপর প্রতিশোধ নিতে পারে। তাই ইরফান চাচ্ছে এই ব্যাপারে ভালো করে জেনে তারপরে চিকিৎসা করতে। কিন্তু অবস্থা দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে। ইরফান কি পেরেছিল পিচ্চি মেয়েটাকে সুস্থ করতে? পেরেছিল কি জানতে কে করেছে এই যাদু? কেন করলো এই যাদু? সব কিছুর উত্তর লুকিয়ে আছে এই ছোট্ট বই ‘অসূয়া’তেই!
‘তমিস্রা’ পড়া থাকলে এটার প্রতি আগ্রহ বেশি থাকবে। সিকুয়েল হলেও যদি আগের বই পড়া না থাকেও তাহলে এই বই পড়তে অসুবিধা হবেনা দুয়েক জায়গা ছাড়া। যেমন- ইরফান চরিত্রটা একটু বুঝতে সমস্যা হতে পারে। তবে আমি ভাবছিলাম এই বইটা ‘তমিস্রা’র সাথে সংযোগ থাকবে। সেরমক কিছু অবশ্য নেই।
আগের বইটারর চেয়ে এই বই অনেক সাদামাটা। কিন্তু তাই বলে খারাপ লাগার উপায় নেই। অসাধারণ লিখনশৈলী।
তাছাড়া এই কাহিনীর পরিবেশটা খুব গা ছমছমে।
কাহিনী খুব সোজাভাবে এগিয়ে গেছে। প্লটে তেমন ঘোরপ্যাঁচ ছিলনা। টুইস্ট ছিলনা।
তারপরেও কাহিনী যা ছিল তাতে আরেকটু বিস্তারিত লিখলে মনে হয় ভালো হত। আসলে ‘তমিস্রা’ পড়ার পর এক্সপেকটেশন অনেক ছিল এর সিকুয়েল এর প্রতি। সেটা যদি পুরোন না হলেও খারাপ লাগেনি। লিখনী মুগ্ধ করে রেখে বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। তাছাড়া এমন প্লটে গল্প খুব বেশি লেখাও তো হয়নি। তমিস্রা বইটা না পড়লেও এইটা আলাদা পড়তে কোনো সমস্যা নেই।
চরিত্রের ভূমিকায় খুব বেশি কাউকে দেখা যায়নি। ইরফান তো ছিলই। সাথে একটা ছোট সংসার! তৌহিদ, তার স্ত্রি আফসানা সবং তাদের সাত বছর বয়স্ক সন্তান। মুটামুটি এরাই প্রধান চরিত্র। এছাড়া গল্পের প্রয়োজনে বেশ কিছু পার্শ্বচরিত্র তো ছিলই।
সবশেষে বলবো, ছোট দারুন একটা বই। খুব সহজেই ডুবে যাওয়া যায় এমন বই।