কফিন রোড PDF Download পিটার মে

থ্রিলার জগতে পশ্চিমা দেশে পিটার মে একজন পরিচিত মানুষ হলেও বাংলাদেশে তার বইয়ের অনুবাদ একটাই। সেটা হলো ‘কফিন রোড’। নাম শুনেই হরর একটা ফিল আসে! কিন্তু বইটা মূলত ক্রাইম থ্রিলার সাথে সায়েন্সের বিষয়াবলি আছে। কিন্তু সায়েন্স ফিকশন নয় আবার। এ সম্পূর্ণ অন্য ধরনের। বইটার অনুবাদ করেছেন মাহীনূর মীম। এবং এম এস আই সোহান। অর্থাৎ টিম ট্রন্সেলেটর। সেরা না হলেও তাদের মুটামুটি ভালো অনুবাদকই বলা। যাই হোক, বইটার পিডিএফ পড়তে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে অনায়াসে।

কাহিনী সংক্ষেপ

জ্ঞান ফেরার পর লোকটা নিজেকে আবিষ্কার করে সমুদ্রের তীরে বালুর মধ্যে। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, লোকটি তার পূর্বের কোনো কথা মনে করতে পারছে না, এমনকি তার নিজের নামও তার মনে নেই। একজন বয়স্ক মহিলার সাহায্য নিয়ে সে তার কটেজে ফিরতে পারল। কটেজের সব জায়গা তার পরিচিত মনে হচ্ছিল; এমনকি তার বাড়িতে থাকা কুকুরটার নামও সে অজান্তেই ডেকে ওঠে; কিন্তু পূর্বের স্মৃতি কিছুতেই মনে আসে না।

সে তার বাড়ি তন্নতন্ন করে খুঁজতে শুরু করল, যদি তার নিজের পরিচয় এবং কাজ সম্পর্কে কিছু জানতে পারে! সারা বাড়ি খুঁজে সে কিছু কাগজ, জন্মসনদ পেল এবং সেগুলো অনুযায়ী তার নাম নিল ম্যাকলেইন। কিন্তু সে তার কাজ সম্পর্কে যে তথ্য পেল তার সাথে কিছুতেই পরিচিত হতে পারছিল না। খুব অদ্ভুত ভাবে সে আবিষ্কার করল, সে অনেক বিষয় সম্পর্কেই জানে, কিন্তু কীভাবে জানে বা সেগুলোর সাথে তার কী সম্পর্ক তা সে কিছুতেই মনে করতে পারল না।

অবশেষে সে তার এক প্রতিবেশী স্যালির সাথে সব কথা শেয়ার করে এবং জানতে পারে, সে ফ্ল্যান আইল্যান্ডের ওপর একটা বই লিখছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, সে তার সারা বাড়ি এবং কম্পিউটারের প্রতিটা ফাইল খুঁজেও তার বইয়ের কোনো তথ্য বা চিহ্ন পেল না। তার মাথা যখন পুরোপুরি খারাপ হওয়ার উপক্রম হলো, তখন সে সিদ্ধান্ত নিল যে, সে নিল ম্যাকলেইনের বাড়িতে যাবে।

বাসায় পাওয়া জন্মসনদ থেকে ঠিকানা বের করে সে নিল ম্যাকলেইনের বাড়িতে গেল ঠিকই, কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার তাকে নিলের স্ত্রী বা মেয়ে কেউই চিনতে পারল না। বরং সে জানতে পারল, নিল ম্যাকলেইন নামের লোকটা আরো দুই বছর আগেই মারা গেছে! তাহলে সে কে? তাকে সবাই নিল ম্যাকলেইন বলে কেন ডাকছিল? নিল ম্যাকলেইনের কাগজ-পত্রই বা তার কাছে কীভাবে এলো? আর সে অন্যের পরিচয়ে কী এমন কাজ করত? কেমন যেন সব গুবলেট হয়ে যাচ্ছে! ব্যাপার কি?

বইটা শেষ করে প্রথমেই আমার মনে হলো, আমার পড়ার তালিকায় আরেকটা সেরা থ্রিলার যুক্ত হলো। কাহিনির শুরুটাই হয়েছিল একটা চমকের মধ্য দিয়ে, যেখানে একটা লোক জ্ঞান ফিরে নিজেকে সমুদ্রের তীরে আবিষ্কার করে এবং তার কোনো স্মৃতিই ছিল না। এরপরের প্রতিটা পর্বও ছিল উত্তেজনায় ভরা।

লেখক একের পর এক রহস্যের জাল বিছিয়ে গেছেন অনেকটা সময় জুড়ে৷ পরে আবার সঠিক সময়ে রহস্যের জাল ভেদ করে সত্যগুলো সামনেও এনেছেন চমৎকারভাবে। বইটা পড়তে গিয়ে কখনও মনে হয়নি যে, একের পর এক রহস্য সৃষ্টি করতে গিয়ে বা রহস্যের জাল ভেদ করতে গিয়ে লেখক তাড়াহুড়া করেছেন। বরং প্রতিটি রহস্য উন্মোচনের পরই চমকে গিয়েছি।
কাহিনির প্রতিটা চরিত্র যেন মেপে বসানো হয়েছে।

পুরো উপন্যাসের ছোটো ছোটো ঘটনাগুলোও একটা আরেকটার সাথে জড়িত ছিল, শুধু উপন্যাস বড়ো করার স্বার্থেই এখানে হুট করে কোনো গল্পের অবতারণা করা হয়নি। সেজন্য পড়তে গিয়ে কখনও একঘেয়েমি সৃষ্টি হয়নি। প্রতিটি চরিত্রেরই এখানে নির্দিষ্ট কাজ ছিল এবং তারা সেগুলো চমৎকারভাবে তাদের কাজগুলো করে গেছে।
সাথে মস্তিষ্কের খোরকও যোগাচ্ছিল।

বইটার অনুবাদ সম্পর্কে যদি বলি, তাহলে বলতে হবে আমি সন্তুষ্ট। প্রথমে একটু কঠিন লাগলেও অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আর বইয়ের কাহিনী এতই চমৎকার যে, বুঝতে কোনো সমস্যাই হয় নি।

সবশেষে বলবো, বইটা না পড়ে থাকলে পড়ুন। অবসরের ভালো সঙ্গী হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top