মধ্যাহ্ন PDF Download হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ূন আহমেদ রচিত মধ্যাহ্ন উপন্যাসের পিডিএফ ফাইল আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলো। যে কেউ বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করতে পারবে। নিচে থেকে ডাউনলোড লিঙ্কে ক্লিক করা লাগবে। তার আগে এ গল্পের কাহিনী সংক্ষেপ জেনে নেওয়া যাক।

মধ্যাহ্ন হুমায়ূন আহমেদ কাহিনী সংক্ষেপ

মধ্যাহ্ন হুমায়ূন আহমেদের একটি অন্যতম উপন্যাস। বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা 408। বেটি অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় 2008 সালে। বইটির মুদ্রিত মূল্য 600 টাকা। বইটিকে ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস ঠিক বলা যাবে না কিন্তু বইটিতে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা লেখক তাঁর লেখনীর মাধ্যমে প্রবেশ ঘটিয়েছেন।

1905 সালের সামাজিক পরিবেশ নিয়ে যে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল তা উপন্যাসটিতে উঠে এসেছে খুব সাবলীলভাবে। মূলত হিন্দু বনাম মুসলমান এবং মুসলমান বনাম হিন্দু নিয়ে যে বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়েছিল তাই লেখক তাঁর লেখনীর মাধ্যমে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন এই বইটিতে।

উপন্যাসটি শুরু হয়েছে বান্ধবপুর গ্রামে যেখানে হরিচরণ নামে এক হিন্দু লোক এক মুসলিম সন্তানকে তার পূজার ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য সমাজ থেকে আলাদা হয় বা তাকে আলাদা করে দেওয়া হয়। সমাজ থেকে আলাদা হওয়ার জন্য তার সেবা করতে থাকে যে ছেলেটিকে তার ঘরে নিয়ে আসে সেই ছেলেটির মা জুলেখা।

জুলেখা উপন্যাসটিতে একটি অন্যতম চরিত্র।সমাজ থেকে আলাদা হওয়া সত্ত্বেও হরিচরণ জুলেখার ছেলে জহিরকে আদর করে এবং ভালবাসে এবং জুলেখাকে কন্যা সমতুল্য চোখে দেখে। জমিদার শশাঙ্ক হরিচরনের থেকে বিভিন্ন সাহায্য নিয়ে থাকে এবং পরবর্তীতে তা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে কিন্তু পরবর্তীতে সেই প্রতিশ্রুতি তিনি ভঙ্গ করে দেন।

জহির এর মা ঘটনাক্রমে তার বাবার থেকে আলাদা হয়ে যায় কারণ তাকে তালাক দেওয়া হয়।তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর স্থান হয় সর্বশেষে রঙ্গিলা নটি বাড়িতে যাকে আমরা নিষিদ্ধপল্লি নামে চিনি। তবে জহির এর মাঝে লেখার একটি অন্যতম প্রতিভা হচ্ছে তার গানের গলা খুবই সুরেলা এবং মধুর।

উপন্যাসটিতে আমরা পরবর্তীতে দেখতে পাই যে জুলেখা রবীন্দ্রনাথ এবং কাজী নজরুলের সংস্পর্শে আসে এবং বড় পর্যায়ে চলে যায়।এমনকি জুলেখার প্রিয় শিল্পী উকিল মুন্সি কে লেখক এখানে সুন্দর ভাবে ব্যবহার করেছেন যার সাথে জুলেখার দেখা হয় রঙ্গিলা নটি বাড়িতেই ।

হরিচরণ বাবুর কাছে এক সময়ে আশ্রয় নেন শশাঙ্ক নামক এক মাস্টার এবং পরবর্তীতে তার আরেক বন্ধু জীবন লাল এসে আশ্রয় নেন।২জনে ছিল আসামি অর্থাৎ ১৯০৫ সালের যে ঘটনাগুলো দেশে ঘটতে থাকে সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে তাদেরকে আসামি সাব্যস্ত করা হয় এবং তারা অন্য পরিচয় দিয়ে পালিয়ে আসে হরিচরনের বাড়িতে।

তবে হরিচরণ তাদেরকে চিনতে পারলেও পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেন নি। জীবনলাল এর উপস্থিতিতেই মৃত্যুর আগে তার সম্পত্তির জহিরকে ভালবেসে লিখিতভাবে দিয়ে যান এবং সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরো একজন । তিনি হচ্ছেন মাওলানা ইদ্রিস।

মাওলানা ইদ্রিস এখানে একটি সহজ সরল চরিত্র।তিনি বগুড়ায় শশাঙ্কের মেয়েকে একটি চিঠি পৌঁছে দেওয়ার নাম করে পথে পাড়ি জমায় কিন্তু পথে বিভিন্ন ঘটনা ক্রমে সে বগুড়া পৌঁছাতে না পেরে এক সময় সে গিয়ে পৌঁছায় কলকাতা শহরে এবং সেখানে গিয়ে তার পরিচয় হয় বিভূতিভূষণ নামক লেখক এর সঙ্গে এবং একসময় উপন্যাসের তিনি বিভূতিভূষণকে সঙ্গে নিয়ে আসে তার গ্রামের একটি তিন মাথাওয়ালা বটগাছ দেখানোর জন্য।

হরিচরণ এর মৃত্যুতে তার সম্পত্তি ভোগ দখল করতে থাকে ধনু শেখ নামের একজন উঠতি বড়লোক যাকে হরিচরণ সাহায্য করেছিল এক সময় তার আর্থিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্য। ধনু শেখ জহিরকে তার সম্পত্তি বুঝিয়ে না দিয়ে ভোগ দখল করার জন্য এবং বিভিন্ন আপত্তিকর কাজ করার জন্য জীবন লাল একসময় তার কাছে পৌঁছায় এবং জহিরকে তার সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে বলে ।

কিন্তু ধনুশের আপত্তি জানায় বলে জীবন তার পায়ে গুলি চালায় এবং সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে বাধ্য করে । ঠিকই তাকে সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয় কিন্তু তার ভেতরে শয়তানের ছাপ আমরা দেখতেই পায় যখন মাওলানা ইদ্রিস গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়। তখন মাওলানা ইমাম করিম এসে উপস্থিত হয় এবং ইমাম করিমের মাঝে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়ার জন্য করিম তার স্ত্রীকে তালাক দেয়।

সে স্ত্রীকে আবার পুনরায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য হিল্লা বিবাহ দেয় কিন্তু হিল্লা বিবাহ করে স্ত্রীকে ফেরত দিতে অস্বীকার জানায় ধনু শেখ। একসময় মাওলানা ইমাম করিম বদ্ধ উন্মাদ হয়ে থাকে এবং তার স্ত্রীর স্থান হয় রঙ্গিলা বাড়িতে। এ এক মর্মান্তিক দৃশ্য পাঠককুলের ভেতরে মমতা ও দয়ার উদ্রেক সৃষ্টি করে।

অন্যদিকে মাওলানা ইদ্রিস এর সাথে এক ঘটনাক্রমে বিয়ে হয় জহির এর মা জুলেখার সঙ্গে । সে দিক থেকে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয় যার নাম পুষ্প রানী। উপন্যাসটিতে আরো উল্লেখযোগ্য চরিত্র আছে যার মধ্যে আরেকটি চরিত্র হচ্ছে উকিল মুন্সির গান গুলো এখনো লোকমুখে শোনা যায়। (আমার গায়ে যত দুঃখ সয়, বন্ধুয়ারে করো তোমার মনে যাহা লয়)।

আরো একটি ভালো চরিত্রের নাম হল ধনু শেখের মেয়ে আতর যার সাথে বিয়ে হয় শাহ নেওয়াজ নামের একটি এম এ ফেল করা ছেলের সঙ্গে। আতরের স্বামী একজন কবি।বঙ্গভঙ্গ এবং বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেই গ্রামে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি হয় । ধনু শেখ কয়েকজন হিন্দু কে মেরে ফেলে।

শহর থেকে লোক আনার হিন্দুদের কে মেরে ফেলার জন্য। কিন্তু হিন্দুদের একাত্মবোধ এর কারণে শহর থেকে নিয়ে আসা লোকজনকে হিন্দুরা ঘেরাও করে এবং তাদেরকে কোন ক্ষতি করতে দেওয়া হয় না।প্রথমদিকে জহির লাবুস নাম ধারণ করে এবং নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।

পরবর্তীতে যখন ফিরে আসে তখন সে হরিচরনের সম্পত্তি ভোগ করতে থাকে। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে যে লাবুস তার ভবিষ্যৎ বা অন্য কারো ভবিষ্যৎ দেখতে পেত। সে দেখতে পেত যে সেই খুব শীঘ্রই মারা যাবে।

প্রথমদিকে লাবুস তার মায়ের কাজকর্মের জন্য হত্যা করতে চাইতো কিন্তু পরবর্তীতে সে মায়ের সান্নিধ্য কামনা করত।উপন্যাসটির শেষের দিকে যখন কাবুস মারা যেতে থাকে তখন জুলেখা এসে উপস্থিত হয় সেই দিঘির ঘাটে।

এসে ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে দেয় মিষ্টি সুরে আমার দুষ্টু ঘুমায় রে ,আমার নেওলা ঘুমায় রে , ভুটু ঘুমায়রে । তিনি যে সুরে গানটি গাওয়া গান তার জন্ম এই পৃথিবীতে নয় অন্য কোনোখানে।
অসম্ভব সুন্দর একটি উপন্যাস । উপন্যাসটি অবশ্যই প্রত্যেক সাহিত্যপ্রেমী পড়া উচিত।

মধ্যাহ্ন হুমায়ূন আহমেদ পিডিএফ ডাউনলোড

বইটির পিডিএফ ফাইল আমাদের ওয়েবসাইট থেকে আপনি ডাউনলোড করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে কোন চার্জ প্রদান করতে হবে না। পক্ষান্তরে ফাইলটি ফেসবুকে শেয়ার করা যাবে। এবং খুবই অল্প মেগাবাইট খরচ করে ডাউনলোড করতে পারবেন। তাহলে আর দেরি না করে নিচে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে বইটি ডাউনলোড করে নিন।

আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। অসংখ্য বই পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আমাদের ওয়েবসাইট ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন।

নিজে বই পড়ুন এবং অন্যকে বই পড়তে উৎসাহিত করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top