রুদ্ধদ্বার PDF Download দিবাকর দাস

বাংলা থ্রিলার সাহিত্যে একটা জোয়ার এসেছে। যা এই জনরা টাকে নিয়ে গেছে অনেক দূর। তারই একটা অংশ ‘দিবাকর দাস’। খুব বেশি পরিচিত না হলেও অপিরিচিতও না। নতুন ধরনের একজন গোয়েন্দা চরিত্র করে তিনি ইতোমধ্যে পাঠকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। এছাড়া আরও বেশ কিছু বই আছে তার। সে যাই হোক, তার এই গোয়েন্দা সিরিজের প্রথম বই ‘রুদ্ধদ্বার’। খুব একটা বড় না বইটা। কিন্তু দারুণ! তাই দারুণ এই বইটা না পড়ে থাকলে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।
কাহিনী সংক্ষেপ
আচ্ছা, একজন ভার্সিটি পাশ করা বেকারের প্রথম কাজ কী? পরিবারের সামনে কুঁকড়ে থাকা, আর রাতদিন এক করে বিসিএস-সহ সব সরকারি চাকরির জন্য মুখ বুজে লেগে থাকা। ইশান রায়ও তার ব্যাতিক্রম ছিল না। সেও ওই পথের পথিক। কিন্তু সময় সব কছু বদলে দেয়। সে তো কারও নিয়ম মেনে চলে না!
ওদিকে গুলশানের আভিজাত এক বুড়ো হঠাৎই কেন আত্নহত্যা করে বসলেন?
আসলেই কি আত্নহত্যা? তদন্তের ভার পড়লো সি আই ডির কাধেঁ।
সামন ঈশানের পরিক্ষা। স্বপ্নের পথে এগোনোর পরিক্ষা। কিন্তু হঠাৎ সে ওই আত্নহত্যার কেসের সাথে জড়িয়ে পড়লো। কিন্তু কিভাবে?
এর থেকে নিস্তার কোথায়? নিজেকে প্রমাণ করার এই একটা উপায়ই আছে তার। কাজে লাগাতেই হবে সেটাকে।
সিআইডির কিংবদন্তি ইফতেখার আমিনের শ্যেনদৃষ্টি আছে তার ওপর। পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কিন্তু, একসময় দেখা গেল পরীক্ষা পাসই আর মুখ্য নয়, বরং পরীক্ষা ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে বাস্তব। বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে এক অভিজাত পরিবারের সব অন্ধকার রূপ।
বন্ধ দরজার সামনে এসে দাঁড়াল ঈশান। বুক ভরে শ্বাস নিলো। এই রুদ্ধদ্বার তাকে খুলতেই হবে!
যারা গোয়েন্দা উপন্যাস পছন্দ করেন, তাদের অবশ্যই ভালো লাগবে। আমার অসাধারন লেগেছে। এবং ‘ইশান রায়’ গোয়েন্দা হিসেবে গতানুগতিক নয়, অনবদ্য। কারন, আমরা সবসময় গোয়েন্দা চরিত্রগুলকে দেখি শুরুতেই গোয়েন্দা হিসেবে তদন্ত করতে, কিন্তু এখানে লেখক নিদারুন দক্ষতার সাথে তুলে ধরেছেন একজন গয়েন্দা কিভাবে গোড়ে উঠে বা তার গয়েন্দাগিরির দক্ষতা, শিক্ষা, পর্যবেক্ষণ অর্জন করার পিহনের কাহিনী।
তাছাড়া বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দা চরিত্রের মধ্যে প্রধানভাবে যাদের আমরা চিনি তারা হচ্ছেন সত্যজিৎ রায়ের ‘ফেলুদা’, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ব্যোমকেশ বক্সী’। তবে বাংলাদেশি সাহিত্যে এমন কোন গোয়েন্দা চরিত্র চোখে পড়েনি যারা কিনা বুদ্ধির খেলা দেখিয়ে তাক লাগিয়েছে। কিন্তু এই ‘রুদ্ধদ্বার’ বইটিতে দিবাকর দাস ‘ঈশান রায়’ নামে একজন অসাধারণ গোয়েন্দা চরিত্রকে ফুটিয়ে চুলেছেন। ঈশান রায় এর বুদ্ধিমত্তা এবং কাজের ধরন চোখে লাগার মতো। ঈশান রায়ের চরিত্রটি কারো চোখ এড়িয়ে যাবে বলে মনে হয় না। যাস্ট অসাধারন ভাবেই লেখক এই চরিত্রটাকে ফুটিয়েছেন।
গল্পের প্রথম দিকে তেমন কিছু উল্লেখযোগ্য নয়। তবে লেখক খুব চমৎকারভাবে আমাদের সমাজকে ভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু গল্প যত সামনের দিকে এগিয়েছে ততোই রহস্যের মাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। তার সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে ঈশান রায় এর মনোবল, ইচ্ছা শক্তি। শেষের দিকের ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। বইটিতে বিরক্তি কোনো পর্বই ছিল না। যারা গোয়েন্দা উপন্যাস পছন্দ করেন, তাদের অবশ্যই ভাল লাগবে। আমার অসাধারন লেগেছে।
এই বইয়ের আরও একটা প্লাস পয়েন্ট হলো এর ক্যারেক্টর ডেভলপ। খুব সুন্দর করে একেকটা চরিত্রকে ফুটিয়েছেন। শুরুতেই ঈশান রায় সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। একজন গোয়েন্দা চরিত্র হিসেবে সে তা ডিজার্ভ করে। এছাড়া বইটার কাহিনী খুবই দ্রুত গতীর। ১৭৬ পৃষ্ঠার এই বইটি পড়তে বিরক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। তবে যারা লেখকের লিখনীর সাথে পরিচিত না, তাদের প্রথমে স্লো মনে হতে পারে কিন্তু বইটা মোটেও তেমন না!
সবশেষে বলবো, বইটা এক কথায় অসাধারণ। ভালো একটা সময় কাটাতে চাইলে বইটা অবশ্যই রেকমেন্ড করবো