তমসামঙ্গল সালমান হক PDF download (ফ্যান্টাসি)

নিয়মিত থ্রিলার পাঠক যারা আছেন, তাদের সকলেরই এক পরিচিত নাম ‘সালমান হক’। অবশ্য অনুবাদের কারনেই সেটা। থ্রিলার, সায়েন্স ফিকশন সহ আরও নানা বই প্রাঞ্জল অনুবাদ করে বেশ খ্যাতি পেয়েছেন। সেই সাথে তার কয়েকটা মৌলিক থ্রিলারও আছে। সবই বরাবরের মত জনপ্রিয়। তার নতুন যে বইটা ‘তমসামঙ্গল’ থ্রিলার নয়। তবে অনেকটা লো ফ্যান্টাসি। সে যাই হোক, এমন অনুবাদকের মৌলিক বই যারা পড়েন নি তারা এই বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে অনায়াসে।

কাহিনী সংক্ষেপঃ সালটা ১৯৭১। কারোই ভুলার কথা নয় এই বছরটার কথা। এই সালেই তো বাঙালি জাতির সব থেকে বড় অর্জনটা হয়েছিল। স্বাধীনতা। বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব, যুদ্ধের বর্ণনা নিয়ে অনেক উপন্যাস, কিশোর উপন্যাস লেখা হয়েছে। তবে এই উপন্যাসটা ঠিক যুদ্ধের নয়। বলা যায় যুদ্ধের সময়ের।

গ্রামটার নাম সুন্দরপুর। ঠিক গ্রামও না, মফস্বল বলা যায়। যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। চারিদিকে যুদ্ধের দামামা বাজছে। গল্প কথক প্রান্ত। ষোলো কি সতেরো বছরের কিশোর। বাবা মারা গেছে আগেই। মা-বোন আছে। তবে এই মুহূর্তে গ্রামে নেই। মামাবাড়ি চলে গেছে। প্রান্তর মা যাবার সময় অনেক অনুনয় করেও প্রান্তকে নিয়ে যেতে পারেনি। কোনো এক অদ্ভুত কারনে প্রান্ত যেতে পারেনি। সে যে খুব সাহসী, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেবে.. এমন কোনো মনোভাব তার ছিল না। তবুও কেন যানি সে গেল না!

প্রায় হাজার খানেক মানুষের এই সুন্দরপুরের জনসংখ্যা এখন খুব বেশি হলে পাচঁশ হবে! কেউ পালিয়েছে, অধিক মারা গেছে মিলিটারিদের হাতে। যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকেই এই সুন্দরপুরে ক্যাম্প গেড়েছে পাকিস্তানিরা। আর চারিদিকে হানাদার দের কড়া পাহাড়া। কিন্তু এই মফস্বলে এমন কি আছে যে এত কড়া পাহাড়া।

প্রান্ত খেয়াল করে কোনো এক অদ্ভুত কারনে এই সুন্দরপুর এলাকায় কোনো পাখি নেই। শোনা যায়না পাখির ডাক। কেউ কি এসব খেয়াল করে না? জীবনের সব হিসেবনিকেশ এক লহমায় বদলে যেতে পারে?

উঁহু, মুক্তিযুদ্ধ নয়, বরং সেটাকে পুঁজি করে লেখা একটা লো ফ্যান্টাসি এই ‘তমসামঙ্গল…!’

যাস্ট অসাধারন একটা বই পড়ে শেষ করলাম। লেখকের সাথে পরিচয় অনুবাদ বইয়ের মাধ্যমে। সে সংখ্যাটাই বেশি কি-না! তবে তার অন্য একটা মৌলিক পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিল, আর পড়েই বুঝেছিলাম, মৌলিকেও কম যান না সালমান হক।
খুবই ঝরঝরে লিখনী। প্রথম দিকে বুঝতে একটু সমস্যা হবে, লেখক আসলে কিসের গল্প বলতে চেয়েছেন? ৫০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত তো মনই বসবে না। তবে উপন্যাস শুরুর নাটকীয়তা আর গল্প বলার ভঙ্গীই বলে দিবে দারুণ কিছু অপেক্ষা করছে! যদিও মূল গল্পে ঢুকতে প্রথমের যে ভূমিকাটা, সেটা একটু বেশিই হয়ে গেছে। কিন্তু খারাপ লাগেনি।

যা একটু খারাপ লেগেছে সেটা হলো বইয়ের এন্ডিংটা। মূল গল্পে ঢুকার পরেই খুব দ্রুতই কিছু ঘটনা ঘটে, এবং পুরো বইয়ে যে সব রহস্য ছিল খুব তাড়াহুড়ো করে সেসবের ব্যাখ্যা দিয়ে লেখক বইটা শেষ করে দিয়েছেন। কিছু জিনিস ক্লিয়ার হয়নি।

চরিত্র বিশ্লেষণঃ মূল কাহিনীতে ঢুকতে যেমন সময় নিয়েছেন, চরিত্রগুলোকেও তেমন সকয় নিয়ে বিল্ডআপ করেছেন। অবশ্য সেটা মূল চরিত্রগুলোকেই শুধু।
প্রান্ত আর মেলোন, এই দুইজনকে বেশ দক্ষতার সাথেই ফুটিয়ে তুলেছেন। পুরো বইয়ে তাদের দুজনের রোলটাই বেশি। তবে অন্য যে চরিত্রগুলো হুটহাট ঢুকেছে তা ভালো লাগেনি।

সবশেষে বলবো, মুক্তিযুদ্ধের সাথে হালকা ফ্যান্টাসির স্বাদ পেতে বইটা অবশ্যই চেখে দেখতে পারেন। আশাকরি হতাশ হবেন না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top